শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১
২৬তম বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন এক দম্পতি। গভীর রাত পর্যন্ত অতিথিরা বাড়িতেই ছিলেন। ধুমধাম করে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন আত্মীয় এবং বন্ধুরা।
তাদের উপস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে পার্টি। এক সময় সকলে বাড়ি ফিরে যান। অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফাঁকা হওয়ার পরই একসঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই দম্পতি। একসঙ্গে লিখে গেলেন সুইসাইড নোটও।
তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সংবাদমাধ্যম বলছে, নাগপুরের মার্টিননগর কলোনিতে থাকতেন ৫৭ বছর বয়সী জেরিল ড্যামসন অস্কার মনক্রিফ এবং তার স্ত্রী ৪৬ বছর বয়সী অ্যান। গত মঙ্গলবার সকালে নিজেদের ফ্ল্যাট থেকেই তাদের নিথর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবারই ছিল তাদের ২৬তম বিবাহবার্ষিকী।
সেই উপলক্ষ্যে আগের দিন রাতে বাড়িতে আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন ওই দম্পতি। রাত ১২টায় বিবাহবার্ষিকীর কেকও কাটেন তারা। কিন্তু কেন তারা সেই রাতেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন, তা স্পষ্ট নয়। সুইসাইড নোটে এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেরিল পেশায় ছিলেন রন্ধনশিল্পী। একাধিক বিখ্যাত হোটেলে রান্নার কাজও করেছেন তিনি। লকডাউনের পর থেকে এই কাজ বন্ধ করে দেন তিনি। তারপর পরিচিতদের সুদে টাকা ধার দিতেন। অ্যান বাড়িতেই থাকতেন। পার্টি শেষ হলে ভোররাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় দু’জন পৃথক সুইসাইড নোট পোস্ট করেন। এই দম্পতি ছিলেন নিঃসন্তান। তাদের সম্পত্তি পরিচিতদের মধ্যে সমান ভাগে যাতে ভাগ করে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধও করেছেন পরিবারের কাছে। তাদের পোস্ট দেখে পরিচিতরা ফ্ল্যাটে যান এবং দু’জনের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল জেরিলের মরদেহ। আর তার স্ত্রীর মরদেহ ছিল সোফার ওপর শোয়ানো। ফুল দিয়ে সাজিয়েও দেওয়া হয়েছিল মরদেহটি।
পুলিশের অনুমান, প্রথমে আত্মহত্যা করেন ওই নারী। মৃত্যুর পর তার মরদেহ নামিয়ে সোফার ওপর রাখেন তার স্বামী। ফুল দিয়ে সাজান। তারপর নিজে একই জায়গায় একইভাবে আত্মহত্যা করেন।
২৬ বছর আগে যে পোশাক পরে তারা বিয়ে করেছিলেন, মৃত্যুর আগেও সেই পোশাকেই সেজেছিলেন এই দম্পতি। তাদের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, দু’জনের মরদেহ একই কফিনে শুইয়ে কবর দেওয়া হয়েছে।
কেন একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন এই দম্পতি, পুলিশের কাছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ। দু’জনের মরদেহই পাঠানো হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। তাদের মোবাইল ফোনগুলোও ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
# মির্জা সাইমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)