বৃহঃস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১
গরু ঢেঁকুর তুললে মালিককে সরকারি কোষাগারে কর দিতে হবে, সম্প্রতি এমন আইন করেছে ডেনমার্ক। পৃথিবীর প্রথম দেশ হিসেবে গরুর ঢেঁকুরের ওপর কর আরোপ করলো দেশটি।
জানা গেছে, গরু ঢেঁকুরের সময় মিথেন গ্যাস ছাড়ে যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আর এ কারণেই ঢেঁকুর তোলা গরু পালায় কৃষকদের বাড়তি কর দিতে হচ্ছে। ডেনমার্কের কৃষকরাও সরকারের এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে এ ধরনের বাড়তি খরচের প্রতিবাদে সরব ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কৃষকরা।
যেহেতু মিথেন পরিবেশের জন্য কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর, তাই ব্যবস্থা নিচ্ছে ডেনমার্ক।
পরিবেশবিদরা বলছেন, গড়ে দশটি গরুর ঢেঁকুরে বছরে এক টন মিথেন নির্গত হয়। টন প্রতি এই মিথেনের ওপর দশ ইউরো কর আরোপ করেছে ডেনমার্ক সরকার।
এই পরিমাণ কর দিতে রাজি হয়েছে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো। বিষয়টি নিয়ে সন্তুষ্ট ডেনমার্কের কৃষি মন্ত্রণালয়ও। তবে ইউরোপের অন্যত্র এই বিষয়ে সদিচ্ছা অনেক কম।
বিষয়টি নিয়ে গবাদি পশু পালনকারী কৃষক ক্রিস্টিয়ান কখের সঙ্গে কথা বলেছে ডয়চে ভেলে। ক্রিস্টিয়ানসফিল্ড নামের ছোট্ট গ্রামের কৃষক ক্রিস্টিয়ান কখ একহাজার গরুর মালিক।
গরু কেন ঢেঁকুর তোলে সেই প্রসঙ্গে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, “গরু জাবর-কাটা পশু। ফলে খাবার কয়েকটি পাকস্থলীর মধ্য দিয়ে যায়। আর এই প্রক্রিয়ায় মিথেন উৎপন্ন হয় যা ঢেঁকুর আকারে বের হয়ে যায়।”
ডেনমার্কের খাদ্য, কৃষি এবং মৎস বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াকব ইয়েন্সন বলেন, “এক্ষেত্রে বার্তাটি হচ্ছে কৃষকদেরকে আরও পরিবেশবান্ধব খামার গড়তে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা খামারের কিছু জমি নিয়ে নেবো এবং সেখানে বন গড়বো। আর এটা দ্রুত করতে চাই আমরা। আমি বিশ্বাস করি কর সংক্রান্ত যে সমঝোতায় আমরা পৌঁছেছি সেটার কারণে এসব কিছু আগের চেয়েও দ্রুত গতিতে করা যাবে।”
গরুর ঢেঁকুর সংক্রান্ত করের ব্যাপারে ভিন্নমত সত্ত্বেও অবশ্য সবপক্ষ বর্তমান সমঝোতায় সম্মতি দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী ইয়াকব ইয়েন্সন বলেন, “ডেনমার্কে আমাদের একে অপরের সঙ্গে কথা বলার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা একটি ছোট্ট দেশ এবং আমাদের একটি ডেনিশ মডেল রয়েছে যার আওতায় আমরা সবপক্ষ একত্রে বসি। সরকার, বিভিন্ন সংগঠন, এক্ষেত্রে কৃষকরা এবং সবুজ সংগঠন মিলে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছেছে।
গবাদি পশু পালক ক্রিস্টিয়ান কখ জানান, কম ঢেঁকুর উৎপাদন হয় এমন খাবার গরুকে দিলে এ সংক্রান্ত করের বোঝাও কমবে।
তবে ডেনমার্কের পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক সংগঠনগুলো অবশ্য চায় না কৃষকরা গবাদি পশুর খাদ্য পরিবর্তন করুক।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)