বৃহঃস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
হাইস্কুলে পড়ার সময়ে ফুটবল খেলতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। উইল পুকোভস্কির জীবনটা এরপর থেকে কেটেছে আঘাতে আঘাতে। আরও স্পষ্ট করে বললে মাথায় পাওয়া আঘাতে। পেশাদার ক্রিকেটে ৭ বছরে ১০ বার বল লেগেছে মাথায়। একের পর এক কনকাশনে জীবনটাই হয়ে গিয়েছে বিপন্ন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১ টেস্ট খেলার পরেই তাই বিদায় বলতে বাধ্য হলেন পুকোভস্কি।
অজি ক্রিকেটে ৪৬০ নম্বর ব্যাগি গ্রিন ক্যাপের মেয়াদ তাই শেষ হলো ১ টেস্টেই। একের পর এক কনকাশনে পড়ে ২৭ বছর বয়সেই নিজেকে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন উইল পুকোভস্কি। অস্ট্রেলিয়ান এসইএন রেডিওতে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানার কথা জানিয়ে দেন এই ওপেনিং ব্যাটার।
রেডিওতে সাক্ষাৎকারে পুকোভস্কি বলেন, 'আমি ক্রিকেটকে সবকিছু দিয়েছি, কিন্তু বারবার মাথায় আঘাত পাওয়ার পর বুঝেছি—এটা আমার শরীরের জন্য আর সম্ভব নয়। আমি জানি, আমার এই সিদ্ধান্তে অনেকেই হতাশ হবে, কিন্তু আমার কাছে এটা এখন জীবন-মরণের প্রশ্ন। আমি আর ক্রিকেট খেলতে পারবো না।'
২০১৭ সালে নিজের ডেব্যু ম্যাচেই ফিল্ডিং করার সময় মাথায় বলের আঘাত পান পুকোভস্কি। সেই বছর অক্টোবরে কুইন্সল্যান্ড এবং নভেম্বর মাসে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের সময় বল আঘাত করে তার হেলমেটে। ২০১৮ সালের মার্চে ফের আঘাত পান। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পেয়েছিলেন ব্যাটের আঘাত। সেই বছর ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেও বলের আঘাতে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
২০২১ ও ২০২২ সালে একবার করে আঘাতের পর ২০২৪ সালের জানুয়ারি এবং মার্চ মাসে ফের মাথায় চোট লাগে তার। এতসব আঘাতের পর ক্রিকেট ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। ২০২৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট শেফিল্ড শিল্ডে তাসমানিয়ার রাইলি মেরেডিথের বাউন্সার আঘাত হেনেছিল পুকোভস্কির মাথায়। সেটাই তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংস।
নিজের অবসরের কথা জানিয়ে এই ব্যাটার বলেন, ‘জীবন যেখানে সংশয়ে, সেখানে আবার পেশাদার খেলাধুলার জগতে ফেরাটা খুব কঠিন ছিল। আমি আর ঝুঁকি নিতে চাই না। সর্বশেষ কনকাশনের পর কিছু কিছু উপসর্গ রয়েই গিয়েছিল। আর এ কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম।’
২৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার এই ক্রিকেটার বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা আমার জন্য সব সময়ই স্বপ্ন ছিল। ২০২১ সালে নিজেকে সে জায়গায় পেয়েছিলাম। আমার স্বপ্ন সেখানেই থেমে যায়নি। ব্যাটিং ইউনিটের নেতা হতে চেয়েছিলাম। খেলতে চেয়েছিলাম ১০০ টেস্ট। দুর্ভাগ্যবশত এক টেস্টেই শেষ হয়ে গেল।’
৭ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ৩৬ ম্যাচে ৪৫.১৯ গড়ে পুকোভস্কি করেছেন ২৩৫০ রান। ৭টি সেঞ্চুরি করা ওপেনারের সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৫৫।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)