শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বিশ্বকাপের সময় থেকে টানা ব্যর্থতায় ঘেরা সময় পার করছিল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টে ধবলধোলাইয়ের পর, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও টি-টোয়েন্টিতে তারা একই ফলের দিকেই আগাচ্ছিল। তবে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়িয়ে সান্ত্বনার জয় পেয়েছে শাহিন শাহ আফ্রিদির দল। যদিও ১৩৪ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়ে কিউইদের চ্যালেঞ্জ জানানো কঠিন ছিল পাকিস্তানি বোলারদের জন্য। সেখানে অলরাউন্ডার ইফতিখার আহমেদের ঘূর্ণিতে সফরকারীরা ৪২ রানের জয় পেয়েছে।
ক্রাইস্টচার্চে আজ (রোববার) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড। আগের চার ম্যাচে পরাজিত সফরকারীরা এদিন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে। কিন্তু বরাবরের মতো এই ম্যাচেও তারা ব্যাট হাতে ব্যর্থতার মঞ্চ সাজিয়েছে। এমন স্পোর্টিং উইকেটে যাকে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ও বলা চলে। কিউই বোলার দাপটে সেভাবে হাত খুলতে পারেননি বাবর-রিজওয়ানরা। তবুও ফখর জামান ও শাহিবজাদা ফারহানের ছোট্ট ক্যামিওতে ১৩৪ রানের মান বাঁচানো পুঁজি পায় পাকিস্তান। রানতাড়ায় ব্যাট করা কিউইদের তারা মাত্র ৯২ রানেই গুটিয়ে দেয়।
এর আগে প্রথম ইনিংসের শুরুতে রানের খাতাই খুলতে পারেননি ওপেনিংয়ে সাইম আইয়ুবের পরিবর্তে নামানো হাসিবুল্লাহ খান। টিম সাউদির স্ট্রেইট ডেলিভারিতে তিনি পয়েন্টে থাকা গ্লেন ফিলিপসকে ক্যাচ দিয়েছেন। সেখান থেকে বাবর-রিজওয়ান ৫৩ রানের জুটি পথ দেখান কিছুটা, যদিও তাতে অবদান ছিল কিউই ফিল্ডারদের। শূন্য ও চার রানে থাকাবস্থায় বাবরকে দু’বার ক্যাচ ছেড়ে জীবন দিয়েছেন মার্ক চ্যাপম্যান। তবুও আগের চার ইনিংসে ফিফটি হাঁকানো বাবরের এই ম্যাচের দৌড় মাত্র ১৩—পর্যন্ত। ইশ সোধির বলে তিনি ক্যাচ দিয়েছেন ফিলিপসকে।
চাপ সামলানো তো দূরে থাক, নিয়মিত বিরতিতে এরপর উইকেট খুইয়েছে সফরকারীরা। মোহাম্মদ নওয়াজ (১) ও ইফতিখার আহমেদরা (৫) বলার মতো কিছু করতে পারেননি। মাঝে আরও এক উইকেট পতন হয়েছিল, যদিও বিদায়ের আগে ফখর জামান ১৬ বলে চারটি ছক্কা ও এক চারের বাউন্ডারিতে ৩৩ রানের দারুণ ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন। অনেক্ষণ ক্রিজে থাকলেও সুবিধা করতে পারেননি পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা রিজওয়ান। ৩৮ বলে তিনি সমান ৩৮ রান করেন।
এছাড়া শেষদিকে একটি করে চার-ছক্কায় শাহিবজাদা ফারহান ১৯ (১৪ বল) এবং আব্বাস আফ্রিদি দুই ছক্কায় ১৪ (৬ বল) রান করেন। নির্ধারিত ওভারে তারা ১৩৪ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়েছে। কিউইদের হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন সাউদি, ম্যাট হেনরি, সোধি ও লকি ফার্গুসন।
চলমান সিরিজের সবচেয়ে কম পুঁজির সামনেও রানতাড়ায় খেই হারিয়েছে স্বাগতিক কিউইরা। এই ম্যাচে ড্যারিল মিচেলকে বিশ্রাম দিয়ে একাদশে নেওয়া হয়েছিল রাচিন রবীন্দ্রকে। কিন্তু সাময়িক বিরতির পর নেমে শুরুটা ভালো হয়নি তার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে স্পিনার নওয়াজের বলে খেলতে গিয়ে রাচিনের শট ওপরে ওঠে যায়। ১ রানে থাকা বাঁ-হাতি এই ব্যাটারের ক্যাচ নেন জামান খান। পরবর্তীতে পাকিস্তানের চেয়েও ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয় দেখিয়েছে মিচেল স্যান্টনারের দল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় তাদের বড় কোনো জুটি গড়েনি।
আগ্রাসী মেজাজের টিম সেইফার্ট অনেক্ষণ ক্রিজে সংগ্রাম করলেও, রান পেয়েছেন টেস্ট মেজাজে। ৩০ বলে ১৯ রান করে ইফতিখারের বলে এলবিডব্লুউ হন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে ৭৪ এবং তৃতীয়টিতে সেঞ্চুরি পাওয়া ফিন অ্যালেনও এদিন সুবিধা করতে পারেননি। ১৯ বলে ২২ করে ফিরেছেন জামানের বলে। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ রান এসেছে ফিলিপসের ব্যাটে। ২২ বলে একটি করে চার-ছক্কায় তিনি করেছেন ২৬ রান। এছাড়া উইল ইয়াংয়ের ১২ রান ছাড়া আর কোনো স্বাগতিক ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।
পাকিস্তানের হয়ে ২৪ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন ইফতিখার। এছাড়া শাহিন ও নওয়াজ দুটি করে এবং জামান ও উসামা মির একটি করে শিকার করেছেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)