শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
টানা দ্বিতীয় কোপা আমেরিকা শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই আজ কলম্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল আর্জেন্টিনা। দুই দলের ফাইনাল ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল চরম নাটকীয়তা। দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে খেলা শুরু হয় ১ ঘন্টা ১০ মিনিট পর। এরপর ম্যাচ শুরু হলেও প্রথমার্ধে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন জেমস রদ্রিগেজরাই। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন লিওনেল মেসি। তাঁর বদলি হিসেবে নামা নিকো গঞ্জালেস এরপর গোলের দেখা পেলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়।
এদিকে দুই দুলই দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের দেখা পেতে ব্যর্থ হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়েও আর্জেন্টিনার উপর ছড়ি ঘুরিয়েছে কলম্বিয়াই। একের পর এক আক্রমণে ব্যস্ত রেখেছে আলবিসেলেস্তেদের রক্ষণ। প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামলে স্কালোনির শিষ্যরাও গোলের লক্ষ্যে মরিয়া হয়েই লড়াই করেছে।
এদিকে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে গোলের দেখা না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই লিড আদায় করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। ১১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন লাওতারো মার্তিনেজ। তাঁর করা এই একমাত্র গোলেই শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পেয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। আসরজুড়েই দুর্দান্ত খেলা এই স্ট্রাইকার লো সেলসোর ফ্লিকে বল পেয়ে ডানদিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন। এই গোলেই নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার ১৫তম কোপা আমেরিকা শিরোপা জয়।
এর আগে দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচটি ৮০ মিনিট পর শুরু হয়। বাংলাদেশ সময় সকাল ছয়টায় খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফা পেছানোর পর সকাল সাতটা ২৫ মিনিটে হাইভোল্টেজের ফাইনালটি শুরু হয়।
ফাইনালের প্রথমার্ধে গোল পায়নি কোনো দলই। সমতায় থেকেই বিরতিতে গেছে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া। ম্যাচের শুরু থেকে দুই দলই আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ করলেও দাপট বেশি ছিল কলম্বিয়ার। শুরু থেকেই আর্জেন্টিনাকে চাপে রাখে তারা। ম্যাচের ৬ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত কলম্বিয়া। যদি না জন করদোবার নেওয়া শট গোলবার ঘেঁষে বাইরে চলে যেত।
ম্যাচের বয়স যখন ১৯ মিনিট, তখন গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। ডি বক্সের ভেতর মেসিকে বল বাড়ান ডি মারিয়া। অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়িয়ে মেসি সেই বল শট নিলেও দক্ষতার সঙ্গেই তা রুখে দেয় কলম্বিয়ার রক্ষণ। রক্ষণে প্রাচীর তুলে মেসির শট আটকে দিয়ে আর্জেন্টিনাকে বিরত রেখেছে গোল করা থেকে।
গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পেরে ম্যাচের ৩২ মিনিটে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকেই জোরাল শট নেন জেফারসন লের্মা। তবে তার সেই থাকেনি লক্ষ্যের। গোলবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায় বলটি। খানিক বাদে আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। সেই আক্রমণে ডি বক্সে কলম্বিয়ার ফুটবলারদের কড়া ট্যাকলের শিকার হয়ে মাঠেই ব্যথায় কুঁকড়ে উঠেন মেসি। এরপর খানিক পর মাঠে নেমে ফের খেলা শুরু করলেও দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি।
এরপর আর সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কলম্বিয়া-আর্জেন্টিনা কোনো দলই। এর ফলে গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। এদিকে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও গোল করার বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। ৫৭ মিনিটে বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন ডি মারিয়া, তবে তা ফিরিয়ে দেন কলম্বিয়ান গোলরক্ষক।
এদিকে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে লুইস দিয়াজের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে পেশির চোটে পড়েন মেসি। এরপর মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ফাইনালে পুরো সময় খেলতে না পারায় এদিন আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে কাঁদতে দেখা যায়। এদিকে মেসির বদলি হয়ে মাঠে নামা নিকো গঞ্জালেস এরপর জালের দেখা পেয়েছিলেন। তবে তাঁর সেই গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। এরপর নির্ধারিত নব্বই মিনিটে দুই দলই গোলের দেখা পেতে মরিয়া হয়ে লড়াই করেছে, তবে শেষ পর্যন্ত জালের দেখা না পাওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)