সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ফাইল ছবি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই–এর সহজলভ্যতার কারণে নকল কনটেন্ট বানানো এখন আর কঠিন কাজ নয়। তাই আসল ও নকলের পার্থক্য বোঝার দক্ষতা জরুরি।
এআই দিয়ে তৈরি ছবি বা ভিডিও প্রথম দেখায় একেবারে বাস্তব মনে হতে পারে। কিন্তু একটু মনোযোগ দিলে ভুলগুলো চোখে পড়ে। যেমন- মানুষের হাতের আঙুল ঠিক না হওয়া, মুখের চারপাশে অস্বাভাবিক ঝাপসা, চোখের দৃষ্টি বেখাপ্পা, দাঁতের সারি সমান না থাকা। ভিডিওতে দেখা যেতে পারে মুখের নড়াচড়া আর আওয়াজের মিল নেই। ঠোঁটের সরে যাওয়ার সঙ্গে কথার তাল মিলতে দেরি হলে বুঝবেন- এটি হয়তো ডিপফেক।
অনেক সময় ছবির মানুষ ঠিকঠাক থাকলেও পেছনের দৃশ্যে ধরা পড়ে ভুল। ছায়া ভুল দিক থেকে পড়ছে, আলোর রং স্বাভাবিক নয়, কোনো বস্তু বাঁকা বা বিকৃত। এসবই এআই–এর পরিচিত ত্রুটি। কখনো একই বস্তু দুইবার দেখা যায় বা ব্যাকগ্রাউন্ড ‘অতিরিক্ত নিখুঁত’ লাগে। এগুলো সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ।
একটি ছবি বা ভিডিও নিয়ে সন্দেহ হলে ব্যাকরণ না দেখে আগে তার উৎস খুঁজুন। গুগল লেন্সের মতো রিভার্স–সার্চ টুল ব্যবহার করে দেখতে পারেন এটি প্রথম কোথায় পাওয়া গেছে। যদি দেখা যায় ছবিটি আগে অন্য প্রসঙ্গে ব্যবহার হয়েছে অথবা কৃত্রিম ছবির সাইটে পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত।
এখন শুধু ছবি নয়, কণ্ঠস্বরও নকল করা যায়। ফলে অনেক পরিচিত ব্যক্তির নামে ভুয়া বক্তব্য ছড়ানো হয়। এসব ভিডিওতে সাধারণত আওয়াজের উচ্চারণ, কথার গতি বা ঠোঁটের নড়াচড়ায় সামান্য অসামঞ্জস্য থাকে। আর এআই–তৈরি লেখা বা ক্যাপশনে দেখা যায় অস্বাভাবিক বাক্যগঠন, অপ্রাসঙ্গিক তথ্য বা একই শব্দ বারবার ব্যবহার।
কোনো খবর বা দাবি ভাইরাল হলেই তা শেয়ার করে দেওয়া ঠিক নয়। অচেনা পেজ, সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট বা যাচাইহীন ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য সহজেই বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। তাই সরকারি দপ্তর বা প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যম যাচাই করে জানার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ভুয়া কনটেন্ট ঠেকানোর প্রথম ধাপই হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা। চোখে পড়া যেকোনো ছবি বা ভিডিও দেখে প্রশ্ন তুলুন- এটি আসল তো? যাচাই না করে কিছু শেয়ার করবেন না। তথ্যের যুগে সচেতন নাগরিকই সবচেয়ে বড় শক্তি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)