বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
পেট্রোবাংলা ও পেট্রোবাংলার আওতাধীন ১৩টি কোম্পানীর চাকরিতে বৈষম্য দূর করার এক দফা দাবি জানিয়েছেন অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত আউটসোর্সিং, মাষ্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মকর্তারা। তাদের দাবি- আউটসোর্সিং, মাষ্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত সকলকে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে বয়স শিথিল করে স্থায়ীকরণ করতে হবে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন সকল কোম্পানির অস্থায়ী কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এসময় বলা হয়, স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকারী গ্রেডে বেতন, প্রফিট বোনাস, উৎসব বোনাস, চিত্তবিনোদন ভাতা, এক্সজেসিয়া বোনাস, ইনসেনটিভ বোনাস, পোশাক ভাতা, সন্তানদের জন্য চিকিৎসা ভাতা, বৈশাখী ভাতা, ইনক্রিমেন্ট ও সকল প্রকার ছুটিসহ নানা সুযোগ সুবিধা পেলেও অস্থায়ী কর্মচারীরা শুধুমাত্র মাসিক বেতন পেয়ে থাকে। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট বৈষম্য, এর অবসান হওয়া দরকার। আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০১৮ বলবৎ থাকলে এই বৈষম্য অব্যাহত থাকবে, যা বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য অন্তরায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্থায়ী কর্মচারীদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা থাকলে এই নীতিমালার অনুযায়ী আমাদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা নেই। ফলে আমরা বছরের পর বছর একই বেতন কাজ করে যাচ্ছি। ‘আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা, ২০১৮’ প্রণয়ন করার ফলে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একই পদের স্থায়ী ও আউটসোর্সিং-এর মধ্যে বেতন বৈষম্য তৈরী হয়েছে। এছাড়া বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বছরের দু’টি ঈদ, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসব এবং বাংলা নববর্ষ বৈশাখ উপলক্ষ্যে আমাদের কোনোপ্রকার ভাতা দেওয়া হয় না।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর নবম অধ্যায়ের ‘কর্মঘন্টা ও ছুটি’ এর ১০৮ নাম্বার ধারায় অধিকাল কর্মের জন্য অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের নাম করে আমাদের অতিরিক্ত কাজের জন্য অতিরিক্ত ভাতা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের অস্থায়ী কর্মচারীদের কোনো ছুটির ব্যবস্থা নেই। আমরা অস্থায়ী কর্মচারী হওয়ার কারণে আমাদের কোনো প্রকার ছুটি দেওয়া হয় না।
এছাড়াও তারা বলেন, আমাদের মধ্যে যারা নারী কর্মচারী রয়েছেন তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা নেই। এক্ষেত্রে চাকরী বাঁচাতে সন্তানকে কোরবানী দিতে হয় অথবা সন্তান বাঁচাতে নিজের উপার্জন আয়ের একমাত্র পথ চাকরী হারাতে হয়। পক্ষান্তরে কোম্পানির স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী হওয়ার কারণে চিত্ত বিনোদনের জন্য স্বপরিবারে ৭ দিন প্রমোদ ভ্রমণ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ প্রাপ্ত বেসিকের ১ বেসিক সমপরিমাণ টাকা পেয়ে থাকেন যা আমাদের দেওয়া হয় না। আউটসোর্সিং-এর নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। চাকরী শেষে বৃদ্ধ অবস্থায় খালি হাতে ফিরে পরিবারের বোঝা হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
এসময় দেশের সংবিধানের আলোকে পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন সকল কোম্পানিকে সব ধরনের বৈষম্যমুক্ত করতে ‘অস্থায়ী কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ’ জোর দাবি জানায়।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)