বৃহঃস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে গুম, খুন, ধর্ষণ ও লুটের সংস্কৃতি এবং রাজনীতি শুরু হয়েছিল তার কবর রচনা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের সন্তানেরা রাজপথে স্লোগান দিচ্ছে ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই, আমরা বৈষম্য চাই না’। আমরা শহীদদের আত্মাকে কথা দিচ্ছি, শহীদদের বেঁচে থাকা আপনজনদের কথা দিচ্ছি, আহত পঙ্গু ভাইদের কথা দিচ্ছি তোমাদের স্বপ্নের সেই সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় মাগুরা নোমানী ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মাগুরা জেলা শাখার আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলছে। আমরা সবাই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। আমরা সেই বৈষম্যহীন সমাজ গড়ব, এতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এ দেশে এমন একটি সরকার দেশ চালাচ্ছিল যারা মানুষের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছিল। মানুষের মুখে একটি অদেখা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। জনগণ সভ্য থাকলেও আমাদের শাসকেরা সভ্য ছিল না। এ জন্য তারা জনগণকে সম্মান করতে পারেনি, ভালোবাসতে পারেনি, জনগণকে দেওয়া কথা তারা রাখতে পারেনি। জাতিকে দেওয়া একটি ওয়াদাও তারা বাস্তবায়ন করেনি। তারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। তারা দেশের জনগণের জন্য কিছুই দিতে পারেনি। দিয়েছি শুধু ছোপ ছোপ রক্ত এবং কাড়ি কাড়ি লাশ। দেশের এমন কোনো জনপথ নেই যেখানে তারা হত্যাকাণ্ড চালায়নি। এমনকি ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে তারা এই দেশ থেকে পালিয়ে গেছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে এমন অনেক লোক আছে যারা বাস করে বাংলাদেশে, চাকরি করে বাংলাদেশে, নেতৃত্বে দেয় বাংলাদেশে, অথচ টাকা জমায় বিদেশে। তারা বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করে। বিগত সাড়ে ১৫ বছরে তারা ২৬ লাখ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেছে। এসব টাকা জাল ফেলে তন্ন তন্ন খুঁজে বের করে দেশে ফেরত আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আগামীতে জামায়াতে ইসলামীসহ সমস্ত ইসলামী দল, দেশপ্রেমিক দল ও মানবিক দলকে সঙ্গে নিয়ে যদি আমরা দেশ পরিচলার সুযোগ পাই, তাহলে আপনাদেরকে একটি মানবিক সরকার উপহার দিতে পারব। সেই দিন আমাদের মায়েরা সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। দল নয়, ধর্ম নয় দেশ আমাদের সকলের এই নীতির ভিত্তিতে যার যেটা অধিকার তার হাতে সেটা তুলে দেওয়া হবে। আমরা এমন একটি মানবিক সরকার গড়ে তুলতে চাই যেখানে দুঃশাসনও থাকবে না, দুর্নীতিও হবে না।
অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের আমির এমবি বাকেরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর জেলা শাখার সাবেক আমির ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আব্দুল মতিন, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক ড. আলমগীর বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য মাওলানা বদরুদ্দিন, জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)