বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সাতক্ষীরার প্রাণকেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত ১৭৪ বছরের পুরোনো প্রাণসায়ের খালের আবার সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) সুলতানপুর বড় বাজার এলাকা থেকে বিশ্ব যুব দিবস উপলক্ষ্যে প্রাণসায়ের খালের দখলমুক্ত ও পরিষ্কার অভিযান শুরু হয়। জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ এই কাজের উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, অবৈধ প্রভাবশালী বলতে কিছু নেই। অবৈধ মালিক সে ছোট হোক বড় হোক সবই অবৈধ। যে অবৈধ তাকে আমরা চিহ্নিত করব। সেভাবেই অপসারণ করব। খাল কোনো ব্যক্তির নয়, সাতক্ষীরার প্রাণসায়ের খাল প্রাণবন্ত করতে চাই।
তিনি বলেন, এখানে আমরা দীর্ঘমেয়াদী একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। রাস্তা করে দেওয়ার। দুই ধারে গাছ লাগানো হবে। এখানে কিছু বেঞ্চ তৈরি করে দেব সেখানে বসবে মানুষ। এভাবেই আমরা দৃষ্টিনন্দন করব। খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার প্রাণসায়ের খাল সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রাণসায়ের খালকে প্রাণবন্ত করতে পানি প্রবাহকে চালু করার দাবি দীর্ঘদিনের। এজন্য আমরা এই খালকে সিলেক্ট করেছি। যুব দিবস উপলক্ষে আজকে আমাদের কার্যক্রম শুরু করেছি। পুরো খালে যে ময়লা আবর্জনা রয়েছে সেগুলো আমরা অপসারণ করব। দুই প্রান্তে স্লুইসগেট খুলে দেওয়ার চিন্তা করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে কাজ করবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, খালের দুই ধারে যেসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সেগুলো আমরা উচ্ছেদ করব। পৌরসভা কর্তৃক খালের দুই ধারে দোকান লাইসেন্স দেওয়া রয়েছে সেগুলো খালের একদম প্রান্ত ঘেঁষে। খালের নীতিমালা অনুযায়ী, খাল থেকে ৩০ ফুট দুই ধারে কোনো স্থাপনা থাকতে পারবে না। আমরা সেটা বিবেচনা করে দেখব। প্রয়োজনে ওই সব লাইসেন্স আমরা বাতিল করে দেব। খালের দুই ধার আমরা পরিষ্কার করে দেব। সৌন্দর্য করতে হয় আমরা সেগুলো করব।
তিনি বলেন, শহরের মানুষের কোনো বিনোদনের জায়গা নেই। হাঁটার জায়গা নেই। খালের দুই পাড়ে রাস্তা করে দৃষ্টিনন্দন করে দিলে সব শ্রেণির মানুষ সেখানে হাঁটতে পারবে। আমরা আশা করি সাতক্ষীরার মানুষ বিশেষ করে শহরের মানুষ তারা আমাকে সহযোগিতা করবে।
জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তা, সেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্যরা একযোগে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। সকলে মিলে খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেন এবং খাল থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেন।
১৮৫০ সালে সাতক্ষীরার তৎকালীন জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা এবং শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রাণসায়ের খাল খনন করান। খালটির দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার। দক্ষিণে মরিচ্চাপ ও উত্তরে বেতনা নদীর সঙ্গে খালটি মিশেছে। তবে খালের মুখ দুটি ভরাট থাকায় প্রবাহহীন হয়ে পড়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)