রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. তাজুল ইসলাম। ‘ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে ব্যাংকটিতে থাকা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তিনি তুলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিনি সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দেন। ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তাজুল ইসলাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন। ২০২২ সালের মার্চে তিনি কমার্স ব্যাংকে এমডি হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি রাষ্ট্র মালিকানাধীন কর্মসংস্থান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনতা ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, জনতা ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। সেই সূত্রে তাজুল ইসলামের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের সখ্য গড়ে ওঠে। জনতা ব্যাংক থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি কমার্স ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ পান।
এদিকে এমডি পদত্যাগ করলেও এস আলম গ্রুপের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান এখনো বহাল রয়েছেন। ফলে ব্যাংকটি সংকট থেকে বের হতে পারছে না।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এস আলম গ্রুপের দখলে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটিকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয়। নতুন পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আতাউল রহমান, মেঘনা ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহসিন মিয়া, চার্টার্ড একাউন্টেট শেখ আশ্বফুজ্জামান। এছাড়া দুজন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন— অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ; যিনি বর্তমানে সরকারের প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে আছেন এবং জনতা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো গোলাম মরতুজা; যিনি জনতা ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন ।
কমার্স ব্যাংকের ৫১ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার সরকারি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৬ সাল থেকে এ ব্যাংকের পুরো নিয়ন্ত্রণ বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের হাতে ছিল। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকও নিয়োগ দেয় এই গ্রুপ। তাদের মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আটকা পড়েছে ব্যাংকটির ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এদিকে কমার্স ব্যাংক থেকে কৌশলে অন্য ব্যাংকে টাকা নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি এস আলম গ্রুপ। তারা ব্যাংকটিতে প্রায় ৬০০ জনবলও নিয়োগ দিয়েছে। এর বেশির ভাগই গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার। সার্বিকভাবে আধা সরকারি এই ব্যাংকের কার্যক্রম থমকে আছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)