বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১
শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের দাবি জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্র ফ্রন্টের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বিভিন্ন দাবি সংবলিত ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, লাল পতাকাসহ একটি মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা দেখেছি ১৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে পুলিশি হামলা হলো। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। কিন্তু এতোদিন পরেও এর বিচার হয়নি। আমরা এই হামলার বিচার চাই। ডাকসুর গঠনতান্ত্রিক সংস্কার নিশ্চিত করে গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের অন্যতম শর্ত ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিতের দাবি জানাই। এছাড়া মেয়েদের আবাসন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অবিলম্বে প্রশাসনকে এর সুরাহা করতে হবে। শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের হাত ধরে, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, গণতান্ত্রিক একই ধারার শিক্ষার দাবি জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জন্ম হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার বেসরকারিকরণ-বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের দাবি, নারী নিপীড়ন-ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে, প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় এবারের ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমরা লড়াই করেছি। গণ-অভ্যুত্থানের পরে গণ আকাঙ্ক্ষা ভঙ্গের চিত্র দেখা যাচ্ছে। গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয় নাই। আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। আমরা দেখেছি, মুখে ঐক্যের কথা বললেও, ঐক্যের নামে চলছে বিভাজনের রাজনীতি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বুঝা উচিত, এই বিভাজনের রাজনীতি দিয়ে জনজীবনের সংকট ভুলিয়ে রাখা যাবে না।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, গণতান্ত্রিক, একই ধারার শিক্ষার পরিপূরক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি এবং মিছিল- সমাবেশ বন্ধের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। অবিলম্বে ডাকসুসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু করা দরকার। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোকে অঞ্চলভিত্তিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমার সঞ্চালনায় সমাবেশে ‘বাসদ (মার্কসবাদী)’-এর সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ইভান তাহসিব, ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি নাহিয়ান রেহমান রাহাত, ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি শাহিনূর সুমি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)