রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২


‘সুখবর’ পাচ্ছেন প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:৬ জুলাই ২০২৫, ১৮:১৫

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের বেতনস্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়া সক্রিয়ভাবে বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। এটাকে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকা ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের জন্য বড় সুখবর হিসেবে দেখা হচ্ছে।

শনিবার (৫ জুলাই) অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।

পত্রে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, রিট পিটিশন নম্বর-৩২১৪/২০১৮ এর বিপরীতে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতনস্কেল ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রায় বাস্তবায়নে সম্মতি দিয়েছে। অবশিষ্ট প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, দশম গ্রেড বাস্তবায়নে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ। এতে ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পথ সুগম হবে। তবে শুধু রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি ছিল, দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়ন। এছাড়া সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১১তম গ্রেডে বাস্তবায়ন। আমাদের দাবি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এর আগে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেদিন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে। এটাকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৪৫ জন রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিশিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করাসহ তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি খারিজ হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে একই বছর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।

এদিকে অধিদফতরের অফিস আদেশে বলা হয়, দশম গ্রেড বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ফৌজদারি অপরাধের শামিল। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কোনোরূপ আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করা হলো এবং চাঁদাবাজি বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণকারীদের নিকটস্থ থানায় সোপার্দ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়ে সরকারের যেহেতু কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই, তাই এ বিষয়টি সরকার পজিটিভলি বিবেচনা করছে।

পরিচালক বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, একটি গ্রুপ এই প্রমোশনকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। তাই সাধারণ শিক্ষকদের এদের থেকে রক্ষা করার জন্য আমরা দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে এই পত্র জারি করি। আমরা আশা করি, এরপর থেকে কোনো প্রধান শিক্ষক বিপথগামী গ্রুপের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হবে না।

মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়ে আমরা অধিদফতর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, সেখান থেকে তা অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে বাকি কাজ শেষ করে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু সময় লাগতে পারে। সূত্র: বাসস

ডিএস /সীমা

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৩:৫০ ভোর
যোহর ১২:০৩ দুপুর
আছর ০৪:৪৩ বিকেল
মাগরিব ০৬:৫৪ সন্ধ্যা
এশা ০৮:১৬ রাত

রবিবার ৬ জুলাই ২০২৫