শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) কর্মরত জনবল বণ্টনে চরম বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুষ্ঠু অ্যাকাডেমিক পদসোপান তৈরির দাবি জানিয়েছে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ভিত্তিক পদসোপান বাস্তবায়ন পরিষদ।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান পরিষদের মুখপাত্র ও ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মুমিন।
তিনি বলেম, মাউশির মোট জনবলের মধ্যে কলেজ শাখার কর্মকর্তার সংখ্যা ৩১ জন, যা ৯১.১৮ শতাংশ। অন্যদিকে বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মকর্তার সংখ্যা মাত্র তিনজন, অর্থাৎ ৮.৮২ শতাংশ। অথচ অধিদপ্তরের অধীন প্রতিষ্ঠানের ৮২ শতাংশই মাধ্যমিক পর্যায়ের, কলেজ মাত্র ১৮ শতাংশ। ফলে ১৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের জন্য ৯১.২ শতাংশ জনবল এবং ৮২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের জন্য মাত্র ৮.৮ শতাংশ জনবল কর্মরত রয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষায় সঠিক সেবা প্রদানের জন্য জনবল বৃদ্ধি অপরিহার্য হলেও সুষ্ঠু পদসোপান না থাকায় তা করা যাচ্ছে না। বর্তমানে কলেজ শাখার শিক্ষকদের ৫৭.২ শতাংশ পদোন্নতির সুযোগ থাকলেও বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় এই হার মাত্র ৭.০৬ শতাংশ, যা ৫০ শতাংশেরও বেশি বৈষম্য তৈরি করেছে।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার প্রবেশ পদ ৯ম গ্রেডে উন্নীত করে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের মর্যাদা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে ৪–৬ স্তরের সুষ্ঠু অ্যাকাডেমিক পদসোপান প্রণয়ন করতে হবে। এ ব্যবস্থা চালু হলে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষায় গতিশীলতা আসবে এবং সব শিক্ষকের জন্য বৈষম্যহীন পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সংবাদ সম্মেলনের সভাপতি ও ফুলপুর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম আজাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পদসোপান সংক্রান্ত আলোচনা ও মতবিনিময় সভা করা হবে। আগামী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে হবে। এর মধ্যে দাবিগুলো পূরণ না হলে ঢাকায় সারা দেশের শিক্ষকদের নিয়ে মহাসমাবেশ আয়োজন করা হবে, যার স্থান ও তারিখ পরে জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতির কারিগর, কিন্তু আমাদের সেই মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষকদের যাতে নিগৃহীত হতে না হয় এবং জাতির কারিগররা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেন, সেই জন্য বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এটি শুধু শিক্ষকদের স্বার্থে নয়, জাতির স্বার্থে।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ভিত্তিক পদসোপান বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)