শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামীকাল বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। সড়ক ও রেলপথ এই অবরোধের আওতায় থাকবে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
নাহিদ ইসলাম জানান, তারা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন না। তারা কোটার বৈষম্য নিরসনে একটি স্থায়ী সমাধান চাচ্ছেন। সেটা নির্বাহী বিভাগকেই করতে হবে। এজন্য সংসদে আইন পাসের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
‘ব্লকেড’ কর্মসূচি সফল করতে আগামীকাল সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেওয়া হবে বলেও জানান নাহিদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাদের আন্দোলন কোটা বাতিলের জন্য নয়, বরং কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবিতে। যৌক্তিকভাবে পাঁচ শতাংশ কোটা থাকতে পারে বলে মনে করেন তারা।
তারা আরও স্পষ্ট করেন যে, এই আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে নয়। তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের অবদানের প্রশ্নে কেউ আঙ্গুল তুলতে পারে না। আমরা প্রশ্ন তুলেছি, নাতি-পুতি কোটার বিরুদ্ধে। পোষ্য কোটার বিরোধিতা করেছি।
আন্দোলনকারীরা জানান, এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। সরকারের উচ্চ মহল থেকে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের লিখিত কোনো আশ্বাস এলে তারা ক্লাসে ফিরে যাবেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
উচ্চ আদালতে মঙ্গলবার যে দুই শিক্ষার্থী কোটার বিষয়ে রিট করেছেন তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
২০১৮ সালের অক্টোবরে কোটাবিরোধী আন্দোলন চরম আকার ধারণ করলে সরকার পরিপত্র জারি করে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করে দেয়। ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন পরিপত্রটি বাতিল করে দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
এই রায়ের পর ফুঁসে উঠেন শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। গত ১ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে জোরালো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে দুই দিন ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে রাজধানী স্থবির হয়ে পড়ে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা রাজপথ অবরোধ করায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষদের।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)