বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের জামায়াত-শিবির সম্বোধন ও মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দীনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিনাত হুদারও পদত্যাগ চেয়েছেন তারা।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবর চার দফা সম্বলিত স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।
দাবি না মানা পর্যন্ত বিভাগের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করা, অবিলম্বে আ ক ম জামাল উদ্দিনকে বহিষ্কার ও চেয়ারপার্সন জিনাত হুদাকে পদত্যাগ করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় বিভাগ ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মহিউদ্দিন বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতন হলেও তার দোসররা এখনো দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে আধিপত্য কায়েম রেখেছে। সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন জিনাত হুদা স্পষ্টতই ফ্যাসিবাদের দালাল। আমরা এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে তার পদত্যাগের দাবি জানাই। তাছাড়া আ ক ম জামাল উদ্দিন কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে হামলা-মামলার হুমকি দিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়েছেন। তিনি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের দেখে নেবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। অবিলম্বে তাকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সাদেকা হালিম ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মশিউর রহমানকে বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা যেন কোনোভাবেই বিভাগে ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া না হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো:
১. শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য, হামলা-মামলার ভয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় হুমকি, এবং শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ করানোর হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত থাকায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীনকে স্থানীয়ভাবে বহিষ্কার এবং মিড টার্ম ও ফাইনাল খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
২. অধ্যাপক জিনাত হুদা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া, ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহুলকে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তারের পর তাকে জানানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া এবং আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১৩-১৭তম ব্যাচ তার কোনো কোর্সের ক্লাস করবে না।
৩. অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও অধ্যাপক মশিউর রহমানসহ ইতোমধ্যে ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগকারী শিক্ষকরা যেন বিভাগে ফিরে না আসেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. শিক্ষার্থীদের হিজাব, নেকাব, বোরখা ও পাঞ্জাবি পরিধানে ধর্মীয় লেবাসে থাকায় আপত্তিকর মন্তব্যকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)