শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করবেন বলে হাজারো মানুষ স্বপ্ননগরী মুম্বাইয়ে পা রাখেন প্রতিদিন। কেউ সফল হন, কেউ আবার দিনের পর দিন কঠিন সংগ্রাম করেও কোনো কূলকিনারা পান না। আবার এমনও মানুষ রয়েছেন, যারা অভিনয় থেকে ছিলেন যোজন যোজন দূরে। স্বপ্নেও কখনও ভাবেননি অভিনয়শিল্পী হবেন। ঘটনাচক্রে হয়েছেন এবং তারকা খ্যাতিও পেয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ইলিয়ানা ডি ক্রুজ। গোয়ার একটি হোটেলে সুপারভাইজরের কাজ করতেন ইলিয়ানার মা।
ইলিয়ানার মাথায় সেই হোটেলের ম্যানেজার মডেলিংয়ের ‘পোকা’ ঢুকিয়েছিলেন। পরে সেই ম্যানেজার অভিনেতা এবং মডেল মার্ক রবিনসনের সঙ্গে ইলিয়ানার দেখা করিয়ে দেন। মার্কের বদৌলতেই বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেন ইলিয়ানা। এরপর তাঁর জীবনে আসে সিনেমা।
২০০৬ সালে তেলেগু ছবি ‘দেবাদাসু’ দিয়ে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু ইলিয়ানার। আর বলিউডে পা রাখেন ২০১২ সালে ‘বরফি’ সিনেমার মাধ্যমে। অনুরাগ বসুর এ সিনেমার মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান ইলিয়ানা। আগে শুধু দক্ষিণী সিনেমার দর্শকের কাছে পরিচিতি থাকলেও এ ছবির কল্যাণে হিন্দি সিনেমার দর্শকের কাছেও পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। গেল মাসে ‘দো অউর দো পেয়ার’ ছবিতে দেখা গেছে ইলিয়ানাকে।
তবে সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, ‘বরফি’ সিনেমায় অভিনয় করে অম্লমধুর অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘যখন বরফিতে কাজ করছিলাম, তখন অনেকে ধরে নিয়েছিল আমি আর দক্ষিণের ছবিতে কাজ করতে চাই না। আসলে বরফির গল্পটা ভালো লেগেছে বলেই করছিলাম। ভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র ছিল। ভেবেছিলাম, এমন ছবিতে আর কোনোদিন সুযোগ পাব না। এটা প্রত্যাখ্যান করা আমার জন্য বোকামি হবে। এ রকম নয় যে আমি আর কখনও দক্ষিণের ছবিতে কাজ করব না। কিন্তু তখন মানুষ অদ্ভুত অনুমান করেছিল– সে এখন বলিউডে যাচ্ছে, দক্ষিণের ছবিতে কাজ করবে না। এরপর অফার আসা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক দিন অফার পাইনি। তবে হ্যাঁ, বলিউডে আসার পর খুব ভেবেচিন্তে ছবি বেছে নিচ্ছি।’
মনের মতো চিত্রনাট্য এবং চরিত্র না পাওয়ার কারণেই ইলিয়ানার এমন সিদ্ধান্ত। ভিন্ন ধরনের চরিত্রে নিজেকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে চান তিনি। তাই এখন থেকে শুধু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রেই কাজ করবেন।
বর্তমানে চুটিয়ে দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী। পুত্রসন্তানের মা হয়েছেন। ছেলের নাম রেখেছেন কোয়া ফিনিক্স ডোলান। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও অভিনয় শুরু করেছেন। ইলিয়ানা জানিয়েছেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে তাঁর পাশে থাকে ডোলান। তার একমাত্র ভালোবাসাই তাঁর একনিষ্ঠ সমর্থক– অভিনেত্রীর কথার প্রতিটি ছত্রে তা স্পষ্ট। তবে মা হওয়ার পর ইলিয়ানা কিছুটা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।
তিনি জানিয়েছেন, ছেলের দেখাশোনার ভার তাঁর কাঁধেই। তা সত্ত্বেও মাঝেমধ্যেই একটা অপরাধবোধ কাজ করে। ইলিয়ানার মনে হয়, ছেলের যত্নে কোথাও যেন ত্রুটি থেকে যাচ্ছে। সেই সময় প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন তিনি। ছেলের জন্য আর কী কী করলে খানিকটা স্বস্তি পাবেন, সেটাই চলতে থাকে মনে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ইলিয়ানা এমনই একটি অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁর ভাষ্যে, ‘একদিন ছেলে অন্য ঘরে ঘুমুচ্ছিল। আমি পাশের ঘরে ছিলাম। হঠাৎই ছেলের জন্য প্রচণ্ড মন কেমন করতে লাগল। মনে হচ্ছিল, কতদিন যেন ছেলেকে দেখিনি। দৌড়ে গিয়ে ওকে দেখার পর শান্তি পেয়েছিলাম।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর সূত্রে জানা গেছে, সন্তানের জন্ম হওয়ার আগে থেকেই নানা পরিস্থিতিতে অবশ্য ইলিয়ানার সঙ্গী মাইকেল পাশে রয়েছেন। মাইকেল না থাকলে তিনি কীভাবে এতকিছু সামলাতেন– তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন ইলিয়ানা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)