রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কলকাতার আরজি কর মেডিকেলে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় যখন উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ, তখন চিকিৎসকদের নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েন কমেডিয়ান ও তৃণমূলের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক।
যেসকল চিকিৎসক কর্মবিরতির ঘোষণা দেন, তাদের বেতন বোনাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। এরপরই সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কাঞ্চনের সহশিল্পীরাও অভিনেতাকে বয়কটের হুমকি দেন।
স্বামীর এমন কঠিন সময়ে কাঞ্চনের হয়ে সাফাই গাইতে দেখা যায় স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজকে। এরপর কাঞ্চন মল্লিক প্রকাশ্যে ক্ষমা চান, ভুল স্বীকার করেন অভিনেত্রী শ্রীময়ীও। ফের কাঞ্চন মল্লিকের বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে কড়া বক্তব্য দিলেন শ্রীময়ী।
টিভি নাইনকে শ্রীময়ী চট্টরাজ বলেন, ‘সম্প্রতি আরজি কর কাণ্ড নিয়ে কাঞ্চন একটি মন্তব্য করেছে। এটাকে আমিও সমর্থন করিনি। হয়তো সে দিন ওর মেজাজ ভালো ছিল না, তাই বলে ফেলেছিল। তারপর ও প্রকাশ্যে ক্ষমাও চায়। এত কিছুর পরও ওর ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা যেভাবে আক্রমণ করছে তাতে আমার মনে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
শ্রীময়ীর দাবি, কাঞ্চনের বন্ধুরাই তাকে ছুরি মারার চেষ্টা করছেন। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একজন মানুষকে কতটা ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যা? তারা কাঞ্চনের মন্তব্যের সমালোচনা করছেন তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমার এখন মনে হচ্ছে, কাঞ্চনের যারা বন্ধুবান্ধব আছেন তারাই ওর পিঠে ছুরি মারার জন্য সারাক্ষণ নানা চিন্তা-ভাবনা করছেন।’
এর আগে স্বামীর পক্ষ নিয়ে শ্রীময়ী বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে গুন্ডামি’ চলেছে। পাশাপাশি সুদীপ্তাকেও পাল্টা জবাব দিয়েছেন কাঞ্চনপত্নী।
অভিনেত্রী দাবি করেন, যে ঘটনাটি ঘটছে, সেটা নারকীয়। তিনি বিচার চান। পাশাপাশি, যারা কাঞ্চনকে কটাক্ষ বিদ্ধ করেছেন, তাদের কাছে জানতে চান, ‘শুধু আরজি কর-এ নয়, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও অনেক আকস্মিক মৃত্যু হয়। তখন কি আন্দোলনে নেমে পড়ি? কাজ থেমে থাকে? শুধু সিরিয়ালের নিচে লেখা হয় অমুক চরিত্রটা বদলে গেলেন। সেখানে চিকিৎসকদের তো দায়িত্বটা আরও বেশি, সেটাই বলতে চেয়েছে কাঞ্চন। আমরা কিন্তু সবাই সুবিচার চাইছি। তদন্তের ভার রাজ্যের হাত থেকে কেন্দ্রে গিয়েছে। বড় বড় মানুষরা বিচার করছেন। এখানে চিৎকার করে রক্তবন্যা বইয়ে দিচ্ছি। আন্দোলনের নামে গুন্ডামি হচ্ছে।’
শ্রীময়ীর কথায়, ‘বহু গরিব মানুষ রয়েছেন, যাদের বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। সে কারণে কাঞ্চন বলেছেন যাতে চিকিৎসকরা কাজে ফেরেন। এখন বলবেন, তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রী এটা বলছে। আসলে যারা এসব সামাজিক মাধ্যমে লিখছেন, তাদের কাজ এখানেই লেখা। নিজেদের বুদ্ধিজীবী ভাবেন। তারা দেখাতে চান সব বিষয়ে তাদের জ্ঞান রয়েছে।’
ব্যক্তিগত আক্রমণের বিষয়ে শ্রীময়ী দাবি করেন, ‘যারা আজ কাঞ্চনের বিয়ে নিয়ে কথা বলছেন, তারা নিজেদের দিকে একটু দেখুন। তাদেরও তো অনেক বন্ধু ছিল। আমি অনেককেই দেখেছি সরকারের সুসময়ে হেসে হেসে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। সরকার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছেন। কিন্তু কঠিন সময়ে এলে আবার তাকেই বিঁধছে।’
সুদীপ্তা, ঋত্বিকের করা পোস্ট প্রসঙ্গে শ্রীময়ী সাফ কথা, ‘সুদীপ্তাদি যদি কাঞ্চনকে বন্ধু বলে ভাবতেন, তাহলে একটা ফোন করতে পারতেন। সেটা তো করেননি। তার যা ভাল মনে হয়েছে, লিখেছেন সামাজিক মাধ্যমে। তবে, সুদীপ্তাদি ভালোই করেছেন। এ রকম বন্ধু না থাকাই ভালো। আর যারা চটি চাটা বলেছেন, কাঞ্চন বিধায়ক বলেই এসব বলছেন।’
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)