শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২


অবহেলায় বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে হার্নিয়া!

স্বাস্থ্য ডেস্ক

প্রকাশিত:১৬ আগষ্ট ২০২৫, ১১:২৮

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

হার্নিয়া সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা, মানুষের পেটের ভেতরে খাদ্যনালী মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত বিস্তৃত, এবং এটি বিশ থেকে ত্রিশ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। হার্নিয়ার ক্ষেত্রে পেটের কিছু দুর্বল অংশের পেশী বা কলা ভেদ করে কোনো অভ্যন্তরীণ অঙ্গ বা তার অংশ বাইরে বেরিয়ে আসে। তখন কুচকি এবং অণ্ডথলো অস্বাভাবিক ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়৷

হার্নিয়া বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন— ইনগুইনাল (কুঁচকিতে), আম্বিলিকাল (নাভিতে) বা হাইয়াটাল (ডায়াফ্রামে)। সাধারণত, শরীরের সেই অংশে একটি ফোলা বা পিণ্ড দেখা যায়, যা ব্যথাযুক্ত বা ব্যথাহীন হতে পারে। এই সমস্যাটি শিশুদের থেকে শুরু করে বয়স্কদের মধ্যেও দেখা যেতে পারে এবং এর তীব্রতা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

হার্নিয়া নামটির সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। কিন্তু এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানে না মানুষ। অবহেলা করলে রোগটি কখনো কখনো বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই হার্নিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ছোট অপারেশন করে নিলে খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব।

হার্নিয়া হলে কী হয়

সাধারণভাবে হার্নিয়া হল পেটের দেওয়ালের একটি ত্রুটি বা ফাঁক যার মধ্যে দিয়ে পেটের ভেতরের চর্বি বা খাদ্যনালী বেরিয়ে আসে। এর ফলে পেটের বা কুঁচকির কোনো অংশ ফুলে ওঠে এবং অনেক সময়ে ব্যথার সৃষ্টি হয়।

হার্নিয়া হওয়ার কারণ

হার্নিয়ার কারণগুলো হল কোনো জন্মগত ত্রুটি, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পেশির দুর্বলতা, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলত্ব। এছাড়া আরও যে কারণগুলো হার্নিয়ার সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে সেগুলো হল— কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্টেট বৃদ্ধির কারণে চাপ দিয়ে প্রস্রাব করা, ক্রমাগত কাশি, পেটে আঘাত বা অস্ত্রোপচার, যথেচ্ছভাবে অতিরিক্ত ভারী ওজন উত্তোলন, ধূমপান। পুরুষদের মধ্যে হার্নিয়ার সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কুঁচকি অঞ্চলে দেখা যায় এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রায়শই নাভির কাছে পেটের অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। সঠিক সময়ে হার্নিয়ার চিকিৎসা না করা হলে হার্নিয়ার সমস্যা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। হার্নিয়ার ফাঁক থেকে বেরিয়ে আসা খাদ্যনালী জড়িয়ে গেলে যে কোনো সময় অসহ্য ব্যথা ও বমি হতে পারে। যাকে অবস্ট্রাকটিভ হার্নিয়া বা স্ট্রাঙ্গুলেটেড হার্নিয়া বলা হয়ে থাকে এবং তা প্রাণঘাতী পর্যন্ত হতে পারে।

হার্নিয়ার সঠিক চিকিৎসা

একটি লক্ষণীয় বিষয় হল হার্নিয়ার চিকিৎসা ওষুধের দ্বারা সম্ভব নয়। একমাত্র অপারেশনের দ্বারাই হার্নিয়ার চিকিৎসা সম্ভব। হার্নিয়া চিকিৎসার ভিত্তি হল Mesh বা জালি বসিয়ে হার্নিয়া রিপেয়ার। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে হার্নিয়া অপারেশন এখন অনেক উন্নততর হয়েছে এবং ল্যাপারোস্কপি সার্জারি বা মিনিমালি ইনভেসিভ (MIS) পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে। উন্নত প্রযুক্তি এবং শল্য চিকিৎসকের দক্ষতার ওপর হার্নিয়া চিকিৎসার সাফল্য নির্ভর করে। TAPP, TEP, eTEP, TAR, IPOM হল হার্নিয়া চিকিৎসার বিভিন্ন প্রকার অ্যাডভান্স ল্যাপারোস্কপি সার্জারি।

উন্নত সার্জারিতে ব্যথা প্রায় নেই

ল্যাপারোস্কপি সার্জারিতে কয়েকটি ছিদ্র করে দূরবীনের সাহায্যে অপারেশন করা হয় এবং বা জাল বসানো হয়। এর ফলে খুব দ্রুততার সঙ্গে সুস্থ হওয়া সম্ভব এবং ব্যথাও কম হয় এবং বেশি তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। বর্তমানে রোবটিক সার্জারিতেও হার্নিয়া চিকিৎসা হচ্ছে।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:১৪ ভোর
যোহর ১২:০৩ দুপুর
আছর ০৪:৩৮ বিকেল
মাগরিব ০৬.৩৫ সন্ধ্যা
এশা ০৭:৫১ রাত

শনিবার ১৬ আগস্ট ২০২৫