মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
এমন অবস্থায় নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ এই সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন।
একইসঙ্গে পাকিস্তানে হামলা চালালে নয়াদিল্লিকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি। সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সোমবার সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ভারত যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি)-তে সামরিক হামলা চালাতে পারে। কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই তিনি এ মন্তব্য করলেন।
ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমাদের কাছে খবর আছে, ভারত যে কোনও মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর হামলা চালাতে পারে… (তেমন কিছু হলে) নয়াদিল্লিকে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।”
এদিকে কাশ্মিরে হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ বলেন, “এ ধরনের তদন্তে প্রমাণ হবে, আসলে ভারত নিজেই বা কোনও অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী এতে জড়িত কি না। দিল্লির ভিত্তিহীন অভিযোগের আসল সত্যও উন্মোচিত হবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার নিজের “রাজনৈতিক ফায়দার জন্য এই অঞ্চলকে পরমাণু যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন” বলে খাজা আসিফ অভিযোগ করেন এবং ভারতের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছে ভারত।
আসিফ আরও বলেন, “আমরা ২০১৬ ও ২০১৭ সালে জাতিসংঘকে ভারতের সন্ত্রাসে অর্থায়নের প্রমাণসহ ভিডিও দিয়েছিলাম”। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে যে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে, তার সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্টতা আছে, যাদের প্রতি ভারতের সমর্থন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। অধিকৃত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের এই হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
এছাড়া ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান গত শনিবার “আবদালি” ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে “খোলামেলা উসকানি” বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান “সিন্ধু মহড়ার” অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।
এছাড়া ভারতের সঙ্গে চলমান তীব্র উত্তেজনার মাঝে সোমবার ফের আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় পাকিস্তান।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)