শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২


ত্রাণ নিতে যাওয়া গাজার মানুষকে হত্যার ভয়াবহ বর্ণনা দিলো ইসরায়েলি সেনারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত:২৭ জুন ২০২৫, ২১:৪৮

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বাদ দিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান ‘গাজা মানবিক ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে গাজার সাধারণ মানুষকে ত্রাণ দেওয়া শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। এতে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে বিতর্তিক এ সংস্থা শুরু থেকেই ব্যর্থ হয়। তাদের এখানে যখনই মানুষ ত্রাণ নিতে গেছে, তখনই হত্যার শিকার হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রায় ৫০০ মানুষ নিহত ও চার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

এসব মানুষকে কতটা নির্মম ও নির্দয় ও কোনো কারণ ছাড়া হত্যা করা হয়েছে সেগুলোর ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা। তারা ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজকে জানিয়েছেন, অকারণেই এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। যারা ত্রাণ নিতে এসেছিলেন তাদের কেউই ইসরায়েলি সেনাদের জন্য ঝুঁকির কারণ ছিলেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা বলেছেন, “এটি হলো হত্যাযজ্ঞের মাঠ। আমি যেখানে মোতায়েন ছিলাম, সেখানে প্রতিদিন অন্তত এক থেকে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছে। গাজার এসব মানুষকে শত্রুবাহিনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। তাদের সরাতে ভিড় ব্যবস্থাপনার কোনো কিছু ব্যবহার করা হয়নি, কোনো কাঁদানে গ্যাসও ব্যবহার করা হয়নি। সরাসরি গুলি করা হয়েছে। ভারী মেশিন গান, গ্রেনেড লঞ্চার, কামান থেকে গোলা ছোড়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেছেন, “যখন আমরা গুলি বন্ধ করতাম, তখন মানুষ বুঝত এখন তারা ত্রাণ কেন্দ্রের দিকে আগাতে পারবে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল গুলি।”

তিনি বলেন, “ভোরের দিকে যদি কেউ ত্রাণ কেন্দ্রের লাইনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করত, যা আমাদের অবস্থান থেকে কয়েকশ মিটার দূরে, আবার কিছু ক্ষেত্রে আমরা কাছ থেকে গুলি করতাম। কিন্তু আমাদের সেনাদের জন্য তারা কেউই ঝুঁকির কারণ ছিল না। আমি এখন পর্যন্ত শুনিনি যারা ত্রাণ নিতে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ গুলি ছুড়েছে। সেখানে কোনো শত্রু ছিল না। কোনো অস্ত্র ছিল না।”

অপর এক সেনা বলেছেন, “ক্ষুধার্থ মানুষকে দূরে রাখতে কামান থেকে গোলা ছোড়া কোনো পেশাদারিত্ব নয়, মানবিক কাজও নয়। আমি জানি হামাসের কিছু যোদ্ধাও (ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে) সেখানে ছিল। কিন্তু সেখানে এমন মানুষ ছিলেন যারা শুধুমাত্র ত্রাণই নিতে এসেছিলেন।”

তিনি বলেছেন, “এটি এমন জায়গায় পরিণত হয়েছে, যেখানে নিজস্ব আইন চলে। মানুষের মৃত্যু সেখানে কিছুই না। এমনকি কোনো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হিসেবেও এসব হত্যাকাণ্ডকে উল্লেখ করা হয় না।”

এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে এসব ঘটনা নিয়ে যোগাযোগ করলে তারা এগুলো অস্বীকার করেনি আবার স্বীকারও করেনি।

তবে ইসরায়েলি সেনাদের স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল অফিস জানিয়েছে, ত্রাণ কেন্দ্রে আসা নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা যে যুদ্ধাপরাধ করেছে সেগুলোর তদন্ত তারা করবে।

সূত্র: হারেৎজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৩:৪৬ ভোর
যোহর ১২:০১ দুপুর
আছর ০৪:৪১ বিকেল
মাগরিব ০৬:৫৩ সন্ধ্যা
এশা ০৮:১৭ রাত

শনিবার ২৮ জুন ২০২৫