বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছেন। তবে ট্রাম্প এখনি হাল ছাড়তে রাজি নন। ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত রাখায় পুতিনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে ট্রাম্প মস্কোকে ৫০ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধ না থামালে রাশিয়ার ওপর শতভাগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
তবে এ সময় তিনি ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে গভীর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর বিষয়েও উৎসাহ দেন। ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক ফোনালাপে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কি মস্কোতে আঘাত হানতে পারবে? সেন্ট পিটার্সবার্গেও কি পারবে?’
জেলেনস্কি জবাব দেন, ‘অবশ্যই পারব, যদি আপনি আমাদের অস্ত্র দেন।’
ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মতে, রাশিয়াকে ‘যন্ত্রণার স্বাদ দিতে হবে’—এই উদ্দেশ্যেই তার নতুন কৌশল, যাতে মস্কো আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হয়।
রাশিয়ার রাজধানী ও বড় শহরগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার বিষয়ে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে স্পষ্ট বক্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফোনালাপের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। তবে ফিনান্সিয়াল টাইমস বলছে, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না পেয়ে ট্রাম্প ইউক্রেনকে আরও আগ্রাসী হতে বলছেন।
এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে পেট্রিয়ট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করা হবে। তার ভাষায়, ‘পুতিন দিনের বেলায় শান্তির কথা বলেন, কিন্তু রাত নামতেই সবাইকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেন।’
ন্যাটো সদস্যদের সহযোগিতায় ইউক্রেনকে নতুন সামরিক সহায়তার পরিকল্পনাও প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এই সহায়তার লক্ষ্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে টেনে আনা এবং যুদ্ধ শেষ করার চাপ সৃষ্টি করা।
রাশিয়া এরই মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘ওয়াশিংটন ও ন্যাটোর সিদ্ধান্ত কিয়েভকে শান্তির পথে নয় বরং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পথেই উসকানি দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিশ্লেষণে আমাদের কিছু সময় লাগবে।’
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বছরে গড়িয়েছে। শুরুতে ট্রাম্প এই যুদ্ধ একদিনেই শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তিনি রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়িয়ে কৌশল বদলানোর ইঙ্গিত দিচ্ছেন। বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের অনড় অবস্থান এবং শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যানই ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তনের কারণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং পশ্চিমা জোট ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছাতে পারে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)