বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ‘টু-স্টেট সল্যুশন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে বৈঠকে এ প্রতিশ্রুতি আসে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে এটি দুই দেশের চতুর্থ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, যা বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন গতি পেয়েছে বলে ইঙ্গিত করছে। দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর এমন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই দেশের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান।
তারা যোগাযোগ ও জনগণের পারস্পরিক বিনিময় বাড়ানোর ওপর জোর দেন এবং শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের সফর আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানান।
গাজায় মানবিক বিপর্যয় ও ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় দেশ ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। একইসঙ্গে, সম্মেলন থেকে ফলপ্রসূ ও বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত আশা করেন তারা।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। অতীতে পাকিস্তানবিরোধী কঠোর অবস্থান থাকলেও বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর দুই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এখন বাস্তবমুখী ও ভবিষ্যতমুখী নীতির দিকে এগোচ্ছে।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় দুই দেশ কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছায়। এটিকে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে বাণিজ্য ও সরকারি সফরে যাতায়াত সহজ করবে।
এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি ও সার্কের মতো ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে নতুন করে ভারসাম্য আনতে চাচ্ছে। এখন দুই দেশই অতীত ভুলে উন্নয়ন, বাণিজ্য ও কৌশলগত স্বাতন্ত্র্যতা ঘিরে ইস্যুভিত্তিক সহযোগিতার দিকে ঝুঁকছে।
সম্প্রতি গৃহীত পদক্ষেপগুলো পাকিস্তানের দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন, মুসলিম বিশ্বের সংহতি জোরদার এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ বলেও দেখা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানি কূটনীতিকদের ওপর থাকা কিছু নিষেধাজ্ঞা ও পণ্যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন গতি দিয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)