শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ফিলিস্তিনের গাজা শহরের দক্ষিণে কুয়েত গোলচত্বরে ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খাবারের অভাবে যখন ফিলিস্তিনি শিশুরা মারা যাচ্ছে, এমন সময় দখলদার ইসরায়েল আবারও এমন নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটালো। খবর আল জাজিরার।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা শহরের দক্ষিণে কুয়েত গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কিছু ফিলিস্তিনি। এসময় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে সাতজন নিহত হয়। হামলায় আহত ২০ জনেরও বেশি লোককে আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যেখানে ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
মাঝে গত বছর নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ছিল। যে সময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্রায় দুইশ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস শতাধিক জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।
বাকি জিম্মিদের মুক্তির জন্য নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করা হলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি হচ্ছে না। কারণ, হামাস বলেছে, গাজা যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ এবং সেখান থেকে সব ইসরায়েলি সেনাকে প্রত্যাহার করার শর্ত মানলেই কেবল তারা নতুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছে।
আর ইসরায়েল বলেছে, হামাসকে গাজা থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ অব্যাহত রাখবে। ইসরায়েল তাদের এ প্রতিজ্ঞায় অনড় রয়েছে এবং গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩১ হাজার ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ৬৫৪ জন। নিহতদের মধ্যে সাড়ে ১২ হাজারই শিশু।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)