শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
মধ্য আমেরিকায় ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে কমপক্ষে ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ওই অঞ্চলের আরও হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, অবিরাম বর্ষণের কারণে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি উপচে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বন্যা-বৃষ্টিতে বাড়িঘর ধ্বংস ও ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক এলাকার বাসিন্দারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার এল সালভাদোরের কর্তৃপক্ষ বলেছে, দেশটিতে ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত ১৯ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ছয়জন শিশু রয়েছে। ঝড় থেকে বাঁচতে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
এল সালভাদরের বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান লুইস আমায়া সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘আমাদের অবশ্যই মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। বস্তুগত পণ্য আসে এবং যায়। কিন্তু এখন আমাদের জীবন রক্ষায় মনোযোগ দিতে হবে।’’
একই দিনে ওই অঞ্চলের দেশ গুয়াতেমালার কর্তৃপক্ষ বলেছে, দেশটিতে অন্তত ১০ জন মারা গেছেন। এছাড়া আরও প্রায় ১১ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ৩৮০ জনের মতো মানুষ এখনও অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছেন। ঝড়ে তিন শতাধিক ঘড়বাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও চারটি সেতু ধ্বংস হয়েছে।
গুয়াতেমালার প্রতিবেশী হন্ডুরাস বলেছে, দেশটিতে ঝড়ে কমপক্ষে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। পাশাপাশি এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তারা বলেছেন, বৃষ্টিতে ১৮০টি সম্প্রদায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং ২২টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
এদিকে, মেক্সিকোর বেশিরভাগ অংশজুড়ে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া দেশটির প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও আটলান্টিক উপকূল লাগোয়া এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে তীব্র বজ্রপাত, শক্তিশালী বাতাস, শিলাবৃষ্টি এবং নদীর চারপাশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বৃহস্পতিবার মেক্সিকোর ওক্সাকা রাজ্যের একটি শিশু হাসপাতাল থেকে প্রায় ৮০ শিশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে দেশজুড়ে খরা-বিধ্বস্ত জলাধারগুলো পানি জমেছে। বর্তমানে দেশটির জলাধারগুলো ধারণ ক্ষমতার প্রায় এক তৃতীয়াংশ পানিতে ভরে গেছে।
মেক্সিকোর কোনাগুয়ার পানি কর্তৃপক্ষ উপসাগরীয় ও ক্যারিবীয় উপকূলীয় এলাকাজুড়ে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে বাতাস এবং ১০ ফুট উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় লাগোয়া এলাকায় শক্তিশালী বাতাস ও সম্ভাব্য টর্নেডো সৃষ্টি হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)