শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার বাংলাদেশ সীমান্তে চলাচলে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করা হয়েছে। রাজ্যটির পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা প্রশাসক এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
এর ফলে আগামী ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলের ৫০০ মিটার বরাবর রাতে চলাচল বন্ধ থাকবে। সোমবার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একটি নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করেছেন, যেখানে রোববার থেকে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে আগরতলা এবং মোহনপুর মহকুমাজুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৫০০ মিটার বরাবর জনসাধারণের চলাচল সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বৈরী পরিস্থিতির কারণে গত দুই মাস ধরে সীমান্তের ওপার থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অন্য রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার সময় ত্রিপুরায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, গত জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। ক্রমেই সেই আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানের রূপ নেওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। তারপর থেকেই সীমান্ত হয়ে বহু বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে ভারতের প্রবেশ করছেন।
বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরা সীমান্ত হয়ে চোরাপথেই বহু বাংলাদেশি ভারতে ঢুকে পড়ছেন। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তারপরও বহু বাংলাদেশির অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।
প্রায়শই একাধিক ব্যক্তি ধরা পড়ছেন সীমান্তবর্তী নানা এলাকায়। তাদের অনেককে আটক করা হয়েছে, আবার অনেককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই অবস্থায় সীমান্ত হয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিলো ত্রিপুরা।
মূলত সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ আটকাতে পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা প্রশাসক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এর মাধ্যমে সীমান্তে সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আগরতলা এবং মোহনপুর মহকুমাজুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৫০০ মিটার বরাবর সাধারণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এই নির্দেশে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাত ৮ টা থেকে ভোর ৫ টার মধ্যে কেউ সীমান্তের ৫০০ মিটারের মধ্যে চলাচল করতে পারবেন না। রোববার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। আর এই নির্দেশ অমান্য করলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নির্দেশে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত দুই মাস ধরে বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অন্য রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার সময় ত্রিপুরায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিককে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই কারণে দুই দেশের সীমান্তে মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা প্রশাসক ড. বিশাল কুমার।
তিনি বলেন, “মানুষের জীবনের পক্ষে হুমকি এবং শান্তিতে ব্যাঘাত রোধ করতে সীমান্তে যাতায়াতের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী, কর্তব্যরত সরকারি কর্মকর্তা এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের এই নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২২৩ ধারার অধীনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)