শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্র রাজনীতি চলতে বাধা নেই।
সোমবার (১ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ।
এর আগে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন বুয়েটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বি।
২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। কিন্তু ওই ঘটনার চার বছর না পেরোতেই বুয়েটে আবারও ছাত্র রাজনীতি চালুর জন্য তৎপরতা শুরু করেছে ছাত্রলীগ। এতে সায় আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগেরও। বুয়েটের উপাচার্যও বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে আবারও ছাত্র রাজনীতি চালু করা যেতে পারে।
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক শুরু হয় গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশকে কেন্দ্র করে। এ ঘটনায় পরদিনই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে রাজনীতির বীজ বপনের চেষ্টা হচ্ছে, এমন অভিযোগ এনে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শত শত শিক্ষার্থী। শুক্রবার থেকে তারা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে ছয় দফা দাবি জানান। এর প্রেক্ষিতে ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে ছাত্ররাজনীতি ঠেকাতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ। দেশসেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে তারা। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টিকে কালো আইন হিসেবে দেখছে ছাত্রলীগ।
সমাবেশে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্রীর, জেএমবি ও ছাত্রশিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা বুয়েটে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত একটি নাটক।’
সমাবেশ করার পর বেলা আড়াইটায় প্রকাশ্যেই কয়েক শ নেতা-কর্মী নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। এ সময় তারা বুয়েট শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেন।
এদিকে আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চান না। তাদের যুক্তি, ছাত্ররাজনীতি সহিংসতা ছড়ায়। বছর তিনেক আগে তড়িৎকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড তুলে ধরেন তারা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)