সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আদালতের সময় নষ্ট করায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তার প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে সেলিম প্রধানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ কে এম নুরুল আলম। ইসির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ, ব্যারিস্টার আশফাকুর রহমান। অপর প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমান।
শুনানির শুরুতে সেলিম প্রধানের আইনজীবী তার আবেদনটি নন-প্রসিকিউশনের (মামলা না চালানো) জন্য আদালতের কাছে আর্জি জানান। তখন আপিল বিভাগ বলেন, আপনাদের জরুরি কথা বিবেচনা করে আবেদনটি আপিল বিভাগের লিস্টে আনা হয়েছে। এখন বলছেন নন-প্রসিকিউশন করবেন। সব কিছুর একটা সীমা থাকা দরকার। এরপর আদালতের সময় নষ্ট করায় সেলিম প্রধানকে ১০ হাজার টাকা টোকেন জরিমানা করা হয়।
এর আগে গত ৬ মে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধানের প্রার্থিতা ও প্রতীক বরাদ্দে হাইকোর্টের আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য করেছেন চেম্বার আদালত। এর ফলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানান আইনজীবী।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। পরে এই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে সেলিম প্রধান।
গত ২ মে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধানের প্রার্থীতা ও প্রতীক বরাদ্দে হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন চেম্বার আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৬ মে দিন ধার্য করা হয়।
সেদিন ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমান বলেন,রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি সেলিম প্রধান। গত ২৩ এপ্রিল যাচাই বাছাই শেষে মানি লন্ডারিং ও দুদকের মামলায় সাজার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বাতিল করে। পরে মনোনয়নের বৈধতা চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর সেলিম প্রধান আপিল করলে গত ২৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসক আপিল খারিজ করে মনোনয়ন বাতিল বহাল রাখেন। গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টে নিজের প্রার্থিতার বৈধতা ও প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে রিট করেন সেলিম প্রধান। হাইকোর্ট সেলিম প্রধানের প্রার্থিতার বৈধতা ও প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দেন।
সেই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আপিল করেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তার বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূলহোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এ ঘটনায় তখন তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)