রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গভবনে নতুন সরকারের মন্ত্রীদের শপথের মধ্যদিয়ে তাদের অভিষেক হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়াবেন। ইতোমধ্যে নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা গাড়ি নিয়ে বঙ্গভবনে প্রবেশ করা শুরু করেছেন। অনেকে ভেতরে প্রবেশ করে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের স্থান দরবার হলে গিয়ে বসেছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় একে একে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের গাড়ি বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের বরণ করে নিতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে বাহারি সব খাবারের। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের খাবারের মেন্যু থেকে জানা গেছে, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আপ্যায়নে অন্যান্যবারের মতো এবারও খাবারে বেশ বৈচিত্র্য রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের আপ্যায়ন করতে নানা ধরনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মাছ, মাংস ও সবজি জাতীয় খাবারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ফলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি জানান, খাবার হিসেবে দেওয়া হবে মাটন শিক কাবাব, চিকেন সাসলিক ও ভেটকি মাছের ফিস ফিঙ্গার। এছাড়া, বয়েল্ড ভেজিটেবলসের সঙ্গে দেওয়া হবে মাশরুম ও পনির সমুচা। মিষ্টি মুখ করাতে পরিবেশন করা হবে পাটিসাপ্টা পিঠা ও মিষ্টি-বাকলাভা।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জানান, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের সন্ধ্যার আপ্যায়নে থাকবে কমলা, আপেল ও আঙুর দিয়ে সাজানো ফ্রুটস বাস্কেট। আর বঙ্গভবনের সবুজ লনে সাজানো শামিয়ানার নিচে চা আর কফিতে জমবে শেষ সময়ের আড্ডা আর খোশগল্প।
মন্ত্রিসভার শপথের মধ্যে দিয়েই টানা চতুর্থ মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পঞ্চম মেয়াদে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।
নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। নতুন সরকার গঠনে ইতোমধ্যে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী আর ১১ জন পাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।
এদিকে দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে জানানো হয় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ৩৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের ২ দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ১১ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গকে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পদে নিয়োগদান করেছেন।
মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া পূর্ণ মন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন—আ. ক. ম মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কাদের, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, আসাদুজ্জামান খান, ডা. দীপু মনি, মো. তাজুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুখ খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, আবদুস শহীদ, সাধন চন্দ্র মজুমদার, র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, আব্দুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আবদুস সালাম, মহিবুল হাসান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন, ফরিদুল হক খান, জিল্লুল হাকিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নাজমুল হাসান পাপন, ইয়াফেস ওসমান(টেকনোক্র্যাট), ড. সামন্ত লাল সেন(টেকনোক্র্যাট)।
প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন—বেগম সিমিন হোসেন রিমি, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহমেদ পলক, মো. আলী আরাফাত, মহিবুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাহিদ ফারুক, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রুমানা আলী, শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আহসানুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে পেছনে ফেলে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন; যাদের মধ্যে ৫৯ জন আওয়ামী লীগেরই নেতা। আর জাতীয় পার্টির আসন অর্ধেকের বেশি কমে নেমেছে ১১টিতে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। একটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)