সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১
বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সন্ত্রাস দমনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার দেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের নতুন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। অন্তর্বর্তী সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ সমর্থনের কথা জানান তিনি। জ্যাকবসন বলেন, ‘আমরা একটি জাতি হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে আপনার সরকারকে সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত।’
মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কিছু সাংবাদিকের গ্রেফতার এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কিছু সহিংসতার প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার সরকার দেশের প্রত্যেকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এবং মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অগ্রগতি ও মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে চলমান সংস্কার উদ্যোগ, জুলাইয়ের ঘোষণায় রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে কথা বলেন।
জুলাইয়ের ঘোষণার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি আশা করছেন ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাবে। বলেন, ‘বাংলাদেশে চলমান সংস্কার উদ্যোগ, জুলাইয়ের ঘোষণায় রাজনৈতিক ঐকমত্যে গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জুলাইয়ের ঘোষণা নিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করছি।’
‘এখন পর্যন্ত আমি কোনো ভিন্নমতের কণ্ঠস্বর শুনিনি। সরকার শুধু সহায়কের ভূমিকা পালন করবে। আমার কাজ একটি ঐকমত্য তৈরি করা’—যোগ করেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের প্রস্তাবে সম্মত হলে সরকার তাদের জুলাই সনদ তৈরি করতে তাতে স্বাক্ষর করার অনুরোধ করবে।
সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং এটিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত করার নিজের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এভাবেই সার্কের ধারণাটি এসেছে এবং আমরাই এর সূচনাকারী।
তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির জন্য দেশটির সমর্থন চান।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ মার্কিন তুলার একটি শীর্ষ আমদানিকারক। দেশটিকে আরও বেশি পোশাক এবং টেক্সটাইল আমদানি করার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)