বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬১টি জেলায় ইউনিয়ন ভিত্তিক ৪ হাজার ২০০ জন লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এলএসপি) ন্যূনতম গ্রেডে বেতন ভাতা প্রদান ও রাজস্বকরণের দাবি জানিয়েছে এলএসপি কল্যাণ পরিষদ বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম জামান বলেন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ৬১টি জেলার ৪ হাজার ২০০ জন (ইউনিয়ন ভিত্তিক) এলএসপিগণ দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। প্রকল্পের কর্মকর্তাগণের দূরদর্শী নেতৃত্ব, সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও গবেষণার ফলশ্রুতিতে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত প্রান্তিক খামারিদের কাছে হয়ে উঠেছে ব্যাপক আলোচিত ও সম্ভাবনাময়ী।
এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠিতব্য প্রশিক্ষণ ৪ হাজার ২০০ জন এলএসপিকে রূপান্তরিত করেছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদে। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কোভিড-১৯ চলাকালীন প্রকল্প থেকে প্রদত্ত আর্থিক প্রণোদনা স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পূর্ণ করেছি। বর্তমানে সারা দেশে আমরা ৬ হাজার ৫০০টি (আনুমানিক) প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি করেছি যা পিজি নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা শীতকালীন, গ্রীষ্মকালীন প্রাণির চিকিৎসা ও যত্ন বিষয়ে সুপরামর্শ প্রদান করে আসছি। এ ছাড়া প্রচলিত খামার ব্যবস্থাপনার ধারণাকে বদলে দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রান্তিক খামারিদের আধুনিক, মানসম্মত ও প্রযুক্তি সম্বলিত খামার গঠনে নানা প্রকার পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করে যাচ্ছি। যার ফলে এলডিডিপি প্রকল্প ও প্রাণিসম্পদের কার্যক্রম প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে।
কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এই যে, চিকিৎসালয় হিসেবে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, কৃষকদের জন্য আছে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কিন্তু স্থায়ীভাবে খামারিদের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ সেবা বা পরামর্শ কেন্দ্র না থাকায় প্রান্তিক খামারিদের সুদূর উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে জরুরি অবস্থায় অসুস্থ প্রাণিকে চিকিৎসা সেবার জন্য নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। ফলে খামারিরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে করে দেশ ও খামারি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই দুধ, ডিম ও মাংসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে ইউনিয়ন ভিত্তিক এলএসপিদের স্থায়ী নিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও খামারিদের স্বার্থে চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাণিসম্পদকে অধিদপ্তর যুগোপযোগী করে তোলা হলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করছি।
এমতাবস্থায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ২০০ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে এলএসপিদের ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ সেবা কেন্দ্র চালু করে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে ন্যূনতম গ্রেডে বেতন ভাতা প্রদান ও চাকুরি রাজস্বকরণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)