শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন তার সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা হতাশ বা ক্লান্ত নয়, বিএনপি নেতারা কেউ দেশ ছেড়ে যাচ্ছে না। দেশ ছেড়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতারা ও তাদের স্বজনরা।’
বৃহস্পতিবার (২ মে) তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ নগরীর পথচারীদের মাঝে ঢাকা মহানগর উত্তরের বাড্ডা বিএনপির পক্ষ থেকে খাবার পানি, স্যালাইন বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির কর্মীরা ক্লান্ত, নেতারা হতাশ, কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বিএনপির মুখে আন্দোলনের কথা শুনলে ঘোড়ারও হাসি পায়।
সেতুমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবরা হতাশা থেকে শ্রাবণের বৃষ্টির ধারার মতো অর্নগল মিথ্যা কথা বলছেন। শত নিপীড়নেও বিএনপি নেতারা রাজপথে আছে এবং সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবে। মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, বেসিক ব্যাংকসহ ব্যাংক লুট করে, হলমার্ক কেলঙ্কোরি করে, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার নির্মাণের নামে টাকা লুটপাট করে সে টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। তারা মালয়েশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করে তাদের স্ত্রী-সন্তানদের, আত্মীয় স্বজনদের সেখানে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমরা তো আছি জেলে আসা যাওয়ার মধ্যে। শত নিপীড়নেও রাজপথে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। আমরা কোন জুলুম নির্যাতনের কাছে মাথানত করব না।
রিজভী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ শ্রমিকদের কল্যাণে কিছুই করেনি। বরং শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবিতে, বেতনের দাবিতে, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করতে গেলে চারজন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শ্রমিক নেতা আমিনুল হককে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রানা প্লাজায় হাজারো শ্রমিক হতাহত হলো, তাজরিন গার্মেন্টসে ১০০ শ্রমিক প্রাণ হারালো সেগুলো মানুষ ভুলে যায়নি।
দেশে ভয়াবহ দুর্বিসহ অবস্থা চলছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আজ এক একমাসের মতো দেশে খরা চলছে অগ্নিপ্রবাহ চলছে, নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষকে বাঁচানোর জন্য সরকার কিছুই করেনি। এগুলো হলো চেইন রিঅ্যাকশন।
বিএনপির এই নেতা বলেন- জিয়াউর রহমান খাল খনন, নদী খনন, বৃক্ষরোপন, সেচ ব্যবস্থাসহ যেসব কল্যাণমূলক কাজ করেছিল সেগুলো সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁওয়ে মানুষ সেচের জন্য পানি পাচ্ছে না। সবকিছুর জন্য ডামি সরকারই দায়ী।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, খাল খনন, বৃক্ষরোপণসহ জিয়াউর রহমানের নেওয়া কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলো যদি বাস্তবায়ন হতো তাহলে আজকের পরিস্থিতি হতো না। আজকে বাংলাদেশের মানুষ যে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে সেদিকে আওয়ামী সরকারের কোনো খেয়াল নেই। কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা বিদেশি প্রভুদের দয়ায় ক্ষমতায় রয়েছে।
বিএনপি নেতা বরকত আলীর সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য দেন- দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, মহানগর বিএনপির নেতা ভিপি শামসুল হক, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)