শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
একতরফা নির্বাচন বর্জন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের গণসংযোগ কর্মসূচি হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটন রোডের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা সাড়ে ১১টায় কারওয়ান বাজার পেট্রোবাংলার সামনে থেকে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শুরু করে গণঅধিকার পরিষদ। পরে সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে ইস্কাটন রোডের দিকে গণসংযোগ শুরু করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচনী ক্যাম্পের কর্মীরা এসে স্লোগান ও লিফলেট বিতরণ বন্ধ করতে বলে এবং গালিগালাজ শুরু করেন।
এরপর আরেকটি দল এসে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের গাড়িতে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় গাড়ির পেছনে থাকা গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে তাদের মেরে আহত করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা, সরকারের এমপি, মন্ত্রীরা হঠাৎ নাশকতা ও গুপ্তহত্যার কথা বলছেন। সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নাকি গুপ্ত হত্যা ঘটাতে এজেন্ট ঠিক করেছে। পুলিশের আইজিপিও নাশকতার কথা বলছেন।
তিনি বলেন, যেখানে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মিথ্যা মামলায় কারাগারে, প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে পারছে না... সেখানে তারা কীভাবে নাশকতা ও গুপ্ত হত্যার প্ল্যান করবে? অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ও সরকারের এজেন্সি গুপ্ত হত্যা ও নাশকতার প্ল্যান করছে... আর ওবায়দুল কাদের সাহেবরা আগেই সেটি বিএনপিসহ বিরোধীদের ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে আপনারা দেখেছেন মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে নাশকতার দুই দিন আগেই ডিএমপি থেকে স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি দিয়ে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে স্ট্যান্ডবাই ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবা প্রস্তুত রাখতে। কারণ তারা ভয়াবহ নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। একইভাবে তারা সামনে বড় ধরনের নাশকতা ও গুপ্তহত্যার পরিকল্পনা করেছে। তারা বিরোধীদের ফাঁসাতে ২৮ অক্টোবরের মতো পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করতে পারে। খবর পেয়েছি চার হাজার ভোটকেন্দ্র পোড়াবে। যাতে বিএনপিসহ বিরোধীদের ওপর দায় চাপিয়ে বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহিংস্র হিসেবে দেখাতে পারে।
নুর বলেন, জনগণকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। সরকার জনগণকে রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না। জনগণ যেদিন রাস্তায় নামতে পারবে সেদিনই গণঅভ্যুত্থান ঘটবে। আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে এই ভারতীয় সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। জনগণের প্রতি আহ্বান, আপনারা ভারতীয় মদদের দেশ ধ্বংসের এই একতরফা নির্বাচন বর্জন করুন। ৭ তারিখ কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন না। প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রতি অনুরোধ... আপনারা এই একতরফা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে নিজেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনবেন না। এই একতরফা নির্বাচনে জড়িতদের ইউরোপ-আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দেবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বন্ধ করার নানান পাঁয়তারা চলছে। কিন্তু জনগণের আন্দোলন বন্ধ করার এখতিয়ার কারও নেই। বরং আওয়ামী লীগের অতীতের সব আন্দোলন ছিল সহিংস্র আন্দোলন।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমানের এতে সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মামুন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি তারিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীবসহ অন্যান্য নেতারা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)