শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বার্ধক্য, অসুস্থতা বা অপারগতার কারণে কেউ নামাজ বা রোজার মতো মৌলিক বিধানগুলো পালন করতে না পারলে তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা ও বিধান রয়েছে ইসলামে। এরকমই একটি বিধান হলো- ফিদিয়া (বিনিময় বা মুক্তিপণ)। ফিদিয়া হচ্ছে এক ধরনের কাফফারা।
মৃতব্যক্তির ছুটে যাওয়া নামাজ ও রোজার ফিদিয়া বা কাফফারা আদায়ের বিধান জানতে চান অনেকে। এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হলো- মৃতব্যক্তি যদি তার সম্পদ থেকে তার নামাজের কাফফারা আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যান, তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাফফারা আদায় করতে হবে।
আর যদি তার কোনো সম্পদ না থাকে, বা তিনি সম্পদ রেখে গেছেন কিন্তু কোনো কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যাননি, তাহলে মৃতব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা আদায় করা আত্মীয়দের ওপর জরুরি নয়। তবে স্বজনদের কাফফারা আদায় করে দেওয়াই উত্তম। এর দ্বারা মৃত ব্যক্তির উপকার হয়।
নামাজের কাফফারার পরিমাণ হলো- প্রতিদিন বিতিরসহ ৬ ওয়াক্ত নামাজ হিসাব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজারমূল্য গরিব মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অথবা প্রতি ওয়াক্তের বদলে একজন গরিবকে দুই বেলা তৃপ্তিসহকারে খাবার খাওয়াতে হবে। (ফতোয়ায়ে শামি: ২/৭২)
একইভাবে মৃতব্যক্তির প্রতিটি কাজা রোজার জন্য ফিদিয়ার পরিমাণ হচ্ছে- পৌনে দুই সের গম অথবা একজন দরিদ্রকে পেট ভরে দুই বেলা খাবার খাওয়ানো। কেউ চাইলে নগদ টাকাও দিয়ে দিতে পারে। তা হলো সদকায়ে ফিতরের সমান। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: পৃ-২৯; আল ইনায়া: ২/২৭৩)
মৃত ব্যক্তির ছুটে যাওয়া রোজার কাজা বা কাফফারা আদায়ের বিধান ইসলামে নেই। তবে মৃত্যুকালে তিনি ‘ফিদিয়া’ দেওয়ার অসিয়ত করলে তার রেখে যাওয়া সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে অসিয়ত পূর্ণ করা জরুরি। অসিয়ত না করলে জরুরি নয়। তবে তার প্রাপ্তবয়স্ক ওয়ারিশরা নিজ নিজ অংশ হতে তা আদায় করলে আদায় হওয়ার আশা করা যায়। (আদ্দুররুল মুখতার: ২/৪২৪, জাওহারাতুন নিয়ারাহ: ১/৪৪৩)
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)