মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১
ছবি সংগৃহীত
সিলেট বিমানবন্দর থেকে হামজা দেওয়ান চৌধুরি সপরিবারে পৈতৃক নিবাস হবিগঞ্জের বাহুবলে পৌঁছেছেন। ঘণ্টা দু’য়েক সড়ক পথ পাড়ি দিয়ে হামজা তার শেকড়ে ফিরেছেন। হামজা যখন নিজ বাড়িতে পৌঁছান তখন তাকে অভ্যর্থনা জানাতে যাওয়া বাফুফের তিন জন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বাকি চার জন বিকেলের ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার পথে রয়েছেন।
হামজার আগমনের জন্য বাফুফের চার নির্বাহী সদস্যের প্রতিনিধি দল (ইকবাল হোসেন, গোলাম গাউস, সাখওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহীন ও কামরুল ইসলাম হিল্টন) গতকাল সিলেট ও হবিগঞ্জ পরির্দশন করেন। হামজাকে সিলেট বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানিয়ে তারা আর হবিগঞ্জ যাননি।
সিলেট থেকেই ঢাকায় ফেরার কারণ সম্পর্কে প্রতিনিধি দলের সদস্য গোলাম গাউস বলেন, 'তার বাবাই আমাদের অনুরোধ করেছেন পুনরায় হবিগঞ্জে না যাওয়ার। হামজার চাচা, চাচাতো ভাইরা রয়েছে বাড়ির সার্বিক ব্যবস্থাপনায়। আমরা গতকাল হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সিলেট বিমানবন্দর থেকে বাড়ি পর্যন্ত পুলিশ প্রটোকলে হামজা বাড়ি পৌঁছাবে আবার সেখানেও সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে।’
ফেডারশেন সূত্রের খবর, এই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের হামজাকে নিয়েই আগামীকাল ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা ছিল। বাফুফে কর্তারা গতকাল সিলেট বিমানবন্দরে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই পরিকল্পনা অবশ্য বাস্তবায়ন হয়নি। হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতিই সৃষ্টি হয়েছে। হামজাকে ভিআইপি জোনে রাখা হলেও সার্বক্ষণিক লোকজন তাকে ও তার পরিবারকে ঘিরেই ছিল। সেই ভিড় এড়াতে হামজার দুই হাত ধরে বাফুফের দুই সদস্যের হাটার দৃশ্যও দেখা গেছে।
হামজার জন্য দেশের সকল গণমাধ্যম মুখিয়ে ছিল। সেই গণমাধ্যমের জন্যও সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা করতে পারেনি ফেডারেশন। বাংলাদেশে হামজার মিডিয়ার সঙ্গে অভিষেক হয়েছে ধস্তাধস্তির মধ্যেই। ফুটবলের এত গুরুত্বপূর্ণ দিনে ছিলেন না বাফুফের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু। যিনি মাস খানেক আগে কয়েকটি গণমাধ্যমে হামজাকে রাজসিক সংবর্ধনার বক্তব্য দিয়ে একেবারে অদৃশ্য হয়ে পড়ছেন। আজ বিমানবন্দরে মিডিয়া সেশনের সময় হামজার সামনেই বাফুফে কর্তারা নিজেদের মধ্যে ঠেলা-ঠেলি করেছেন।
বিমানবন্দর একটি সংরক্ষিত জায়গা। সেখানেই যখন অব্যবস্থাপনা হবিগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে সেই শঙ্কার মাত্রা থাকছে আরো বেশি। বাফুফে কর্তারা হবিগঞ্জে হামজাকে পৌঁছে দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সঙ্গে আরেক দফা আলোচনা করে আজ রাতেই সিলেট থেকে ঢাকার ফ্লাইটে ফিরতে পারতেন। সাত জনের কেউই (বিশেষত দায়িত্ব নিয়ে যাওয়া চার জন) এই পথে হাটেননি। আজ সকালে হামজাকে বরণ করতে সিলেট যাওয়া তিন জন (ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, সত্যজিত দাশ রুপু ও মঞ্জুরুল করিম) ঢাকার বিমান ধরেছেন হামজা হবিগঞ্জ রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই।
হামজা চৌধুরি বাংলাদেশে আগমন ও সূচি নিয়ে মূলত কাজ করছিলেন বাফুফে সভাপতি ও জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান তাবিথ আউয়াল নিজেই। ব্যক্তিগত সফরে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও নির্বাহী সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ ইংল্যান্ড ছিলেন মাস দু'য়েক আগে। তখন দুই জন হামজা ও পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাবিথের পাশাপাশি সবুজও হামজার আগমন ইস্যুতে শুরুর দিকে কাজ করেছিলেন। পরবর্তীতে সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম হামজার আগমন ওঅভ্যর্থনার পরিকল্পনা-সমন্বয় সংক্রান্ত বিষয়াদি দেখভাল করলেও আজ তিনি সশরীরে সিলেটে উপস্থিত ছিলেন না।
ট্রফি জয়, বিশেষ কোনো ব্যক্তির আগমন উপলক্ষ্যে বিমানবন্দর বা ফেডারেশন ভবনে বাফুফের অব্যবস্থাপনা যেন নিয়মিত ঘটনাই। বাংলাদেশের জন্য খেলতে হামজা আসছে এটা ফুটবলের অনেক বড় ইভেন্ট। এই উপলক্ষ্যে বাফুফে আনুষ্ঠানিক কোনো কমিটি করেছে বলে জানা যায়নি। হামজার আগমনে উদ্ভুত অব্যবস্থাপনা এবং অর্ভথ্যনা সংক্রান্ত বিষয়ে ফেডারেশনের অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাহী কমিটির সভায় অনেকে এই বিষয়ে মতামত রাখতে পারেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)