সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১


ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যা করছে, তা লজ্জাজনক— বলেছিলেন ম্যারাডোনা

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত:৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৩৭

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

ম্যারাডোনা ছিলেন সেই কণ্ঠস্বর, যারা নিপীড়নের মুখে নীরব থাকে না। কিউবার ফিদেল কাস্ত্রো, ভেনেজুয়েলার হুগো শ্যাভেজ কিংবা বলিভিয়ার ইভো মোরালেস—এই বিপ্লবী নেতাদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল, কারণ তাদের ভিতরে তিনি খুঁজে পেতেন প্রতিরোধের স্পর্ধা। আর ঠিক সেই স্পর্ধাই তিনি দেখিয়েছিলেন ফিলিস্তিনের প্রশ্নে।

আজ যখন গাজা আবারও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যখন ইসরায়েলি হামলায় কাঁপছে একটি জাতি—তখন আরও একবার মনে পড়ে যাচ্ছে ম্যারাডোনার কথা। সেই মানুষটি, যিনি হৃদয়ের গভীর থেকে বলেছিলেন, ‘আমার হৃদয়ে আমি ফিলিস্তিন।’

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর, ম্যারাডোনা মৃত্যুর খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শুধু আর্জেন্টিনা নয়, শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল ফিলিস্তিনও। হামাসের তৎকালীন মুখপাত্র সামি আবু জুহরি টুইটারে লেখেন, “আমরা গভীরভাবে শোকাহত, কারণ ম্যারাডোনা ছিলেন সেই কণ্ঠস্বর, যিনি ফিলিস্তিনের ন্যায্য আন্দোলনকে সমর্থন জানাতেন।”

২০১২ সালে এক সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা গর্ব করে বলেছিলেন, “আমি ফিলিস্তিনি জনগণের সবচেয়ে বড় সমর্থক। আমি তাদের সম্মান করি, এবং নিঃসঙ্কোচে পাশে দাঁড়াই।” আর ২০১৪ সালে যখন গাজায় ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েল, যখন হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়, তখনও চুপ করে থাকেননি তিনি। বলেছিলেন, “ইসরায়েল যা করছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”

শুধু মুখের কথা নয়, তার কার্যক্রমেও ছিল সেই দায়বদ্ধতা। ২০১৮ সালে রাশিয়ায় বিশ্বকাপ চলাকালে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেন, “আমার হৃদয়ে, আমি ফিলিস্তিন।” সেই মুহূর্তের ভিডিওটা এখনো ঘুরে বেড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, প্রমাণ রেখে যায় যে কিছু ভালোবাসা রাজনীতির গণ্ডি ছাপিয়ে যায়।

এমনকি সিরিয়া ইস্যু বা ইরাক যুদ্ধ নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন তিনি। একাধিকবার দেখা গেছে অ্যান্টি-জর্জ বুশ টি-শার্ট গায়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে। তার মতো বিশ্বখ্যাত একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এসব বার্তা ছিল সাহস ও মানবতার অনন্য উদাহরণ।

আজ ফিলিস্তিন যখন আগুনে জ্বলছে, তখন ভাসছে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনার কথা, যিনি পৃথিবীর অন্যপ্রান্ত থেকে ভালোবেসেছিলেন একটি মুক্তিকামী জাতিকে। দিয়েগো ম্যারাডোনা ছিলেন মাঠের কিংবদন্তি, আর মাঠের বাইরেও ছিলেন ন্যায়বোধের প্রতীক। হয়তো তিনি আর নেই, কিন্তু তার কণ্ঠস্বর—“আমি ফিলিস্তিনি”। এখনও গাজার ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে ভেসে আসে প্রতিবাদের গান হয়ে।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ৪:৩০ ভোর
যোহর ১২:০২ দুপুর
আছর ০৪:৩০ বিকেল
মাগরিব ০৬:২০ সন্ধ্যা
এশা ৭:৩৩ রাত

সোমবার ৭ এপ্রিল ২০২৫