রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
এক কথায় ঘরের মাঠে নিজেদের সর্বনাশ দেখতে বসেছে বাংলাদেশ। নিজেদের চেনা মাঠ মিরপুরের শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রায় ৯ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ফেরাটাও সুখকর হলো না মোটেই। লাঞ্চের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ের আগুনে রীতিমত পুড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। টপ অর্ডার আর মিডল অর্ডার শেষ হয়েছে লাঞ্চের আগেই।
ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ছাড়া একে একে ফিরলেন দলের ৬ ব্যাটার। ৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে একপ্রকার ধুঁকতে ধুঁকতেই লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছে বাংলাদেশ। উইয়ান মুল্ডার, কাগিসো রাবাদা আর কেশব মহারাজ বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছেন যন্ত্রণাদায়ক এক সেশন। ওপেনার জয় এখনো টিকে আছেন ৮৬ বলে ১৬ রান নিয়ে।
টেস্ট ক্রিকেটে ক্রিজে টিকে থাকাই যেখানে ব্যাটিং করার মন্ত্র, সেখানে ৬ ওভার শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ হারিয়েছে তিন উইকেট। ওপেনার সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হকের পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও ফিরেছেন ম্যাচের প্রথম ৭ ওভারের আগেই। তিন ব্যাটারই উইকেট দিয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে। আর প্রত্যেকের উইকেটই নিয়েছেন পেসার উইয়ান মুল্ডার।
কোনো রান না করেই আউট ছিলেন সাদমান ইসলাম। ফুল লেংথ ডেলিভারি ছিল। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে অকারণে কাভার ড্রাইভ করার চেষ্টা ছিল বাংলাদেশের ওপেনারের। লাভ হয়নি। উল্টো ক্যাচ গিয়েছে সেকেন্ড স্লিপে। ৬ রানে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন। মুমিনুল হক এদিন দেশের হয়ে সব ফরম্যাট মিলিয়ে শততম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। সেই ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখা হলো না তার। ল্ডারের ওভারে দ্বিতীয় বলে চার মেরেছিলেন। ওভারের চতুর্থ বলটা মিডল স্টাম্পে ফেলে কিছুটা সুইং করিয়েছিলেন মুল্ডার। সেই বলে একইরকম শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে।
দলের বিপর্যয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত এসে থিতু হতে চেয়েছিলেন। তবে অধিনায়কের ব্যাটও হতাশ করেছে বাংলাদেশকে। নিরীহদর্শন বলে ব্লক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল চলে যায় শর্ট মিডঅফে। কেশব মহারাজের সহজ ক্যাচে ৩ উইকেট পূর্ণ করেন উইয়ান মুল্ডার। ৭ রানে প্যাভিলিয়নের পথে লম্বা হাঁটা শান্তর।
২১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে এলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। বল কিংবা পার্টনারশিপ বিবেচনায় তারাই টিকেছেন সবচেয়ে বেশি। জয়কে নিয়ে মুশফিক খেলেছেন ৮ ওভার। দলের স্কোরবোর্ডে সেই জুটি থেকে এসেছে ১৯ রান। এরপরেই কাগিসো রাবাদার ঝড়। অফ সাইডে পিচ করা বলটি দ্রুত ভেতরের দিকে আসে। মুশফিক একটু দেরি করেছিলেন। ক্যারিয়ারে বহুবারই এমন আউট হয়েছেন তিনি। ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে বল গিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে।
লিটনের আউটে অবশ্য কৃতিত্ব বেশি ফিল্ডার ট্রিস্টান স্টাবসের। রাবাদার বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া বলটায় খুব জোরে ব্যাট চালাননি লিটন। বল চলে যাচ্ছিল দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্লিপের মধ্য দিয়ে। কিন্তু স্লিপ থেকে দারুণ এক ক্যাচ নিয়েছেন স্টাবস। পঞ্চাশের আগেই বাংলাদেশের ৫ উইকেটের পতন।
লাঞ্চের আগে শেষ উইকেট হিসেবে মিরাজকে ফেরালেন মহারাজ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারলেন না মেহেদী মিরাজ। প্রোটিয়া স্পিনারের বলটায় মিরাজ মিস করেন বলের লাইন। বল আঘাত করে সামনের প্যাডে। রিভিউ নিয়েও বাঁচা হয়নি তার।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)