বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ফুটবল বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত স্কোরলাইনটা বলা চলে ৭-১। ব্রাজিলের ঘরের মাঠ বেলো হরিজেন্তে স্টেডিয়ামে জার্মানি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে স্বাগতিকদের জালে পুড়েছিল সাত গোল। আলোচিত সেই স্কোরলাইনকে আবার সামনে আনলো বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে ভুটানের মেয়েদের জালে ৭ গোল দিয়েছেন সাবিনা খাতুন-তহুরা আক্তাররা। বিপরীতে হজম করেছে এক গোল।
৭-১ গোলের এই জয়ের পর আরও একবার নারী সাফের ফাইনালে পা রাখল বাংলাদেশের মেয়েরা। পুরো ম্যাচে বলতে গেলে ভুটানের মেয়েদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশ। তহুরা পেয়েছেন হ্যাটট্রিক। অধিনায়ক সাবিনার পা থেকে এসেছে দুই গোল। একটি করে গোল ঋতুপর্তা এবং মাসুরা পারভিনের।
প্রথমার্ধেই অবশ্য ম্যাচের এপিটাফ লিখে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকা সাবিনা খাতুনের দল শুরুর ৪৫ মিনিটেই রীতিমতো গোল উৎসব করেছে। প্রথম লিড নিতে তাদের তেমন অপেক্ষা করতে হয়নি। সপ্তম মিনিটেই তহুরা খাতুনের পাস পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন ঋতুপর্ণা চাকমা। সেখান থেকেই বাংলাদেশের গোল বন্যার শুরু।
প্রথমার্ধে ভুটানের জালে বাংলাদেশের গোলবন্যা
১৫ মিনিটে বাংলাদেশের লিড ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তহুরা। তাতে অবশ্য দায় ছিল ভুটানের। ডিফেন্ডাররা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন তিনি। ডি বক্সের ঠিক সামনে থেকে তহুরা বাঁ-পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন। পরে ১৮ মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল ভুটান। গোলবার কিছুক্ষণ ফাঁকা থাকলেও ভুটানের ডেকি লাজন বেশ দূর দিয়ে বল বাইরে মেরে দেন।
২৪তম মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তার শট গোলবারে লেগে ফেরার পর প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন মনিকা চাকমা। তার পাস পেয়ে সাবিনা শট নেন দূর থেকে। হতাশ হওয়ার এক মিনিটের মাথায় পেলেন কাঙ্ক্ষিত গোল। বাংলাদেশ লিড নেয় ৩-০ গোলে।
ম্যাচটিতে তহুরা নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ৩৫ মিনিটে। ভুটানের একজনকে কাটিয়ে তিনি শট নেন ডি বক্সের বাইরে থেকে। তহুরার দৃষ্টিনন্দন সেই শট বাংলাদেশকে ৪ গোলে এগিয়ে দেয়। ৩৭ মিনিটে ফের সাবিনার আঘাত। এবার গোলরক্ষক রুপনার বাড়ানো বল মধ্যমাঠ থেকে নিয়ে এগিয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে তিনি বল জালে জড়ান।
৪২ মিনিটে এক গোল শোধ করে ভুটানের মেয়েরা। ডেকি লাজনের নেওয়া শট পা বাড়িয়েও ঠেকাতে ব্যর্থ হন রুপনা। ৫-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর বাংলাদেশের খেলায় কিছুটা হলেও ধীরগতির ছাপ ছিল স্পষ্ট। ফাইনালের জন্য নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখা আর নেপালের তপ্ত রোদের নিচে খেলা হওয়ার খুব বেশি প্রেসিং কিংবা আগ্রাসী আক্রমণ দেখা যায়নি। এর মাঝেও ৫৭ মিনিটে মনিকা চাকমার চিপ শটে বল পেয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তহুরা।
আর বাংলাদেশের হয়ে সপ্তম গোল করেছেন ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিন। চলতি আসরে দারুণ ছন্দে থাকা এই ডিফেন্ডার কর্ণার থেকে মাথা ছুঁইয়ে করেছেন গোল। এরপর বাংলাদেশ বেশ কয়েকবার চাপ সৃষ্টি করলেও গোল আদায় করে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ৭-১ গোলের জয়েই শেষ হয় সেমিফাইনালের এই ম্যাচ।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)