শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
যশোরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এছাড়া ছয় শিক্ষার্থীকে পুলিশ মিছিল থেকে ধাওয়া করে আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এবং শহরের ধর্মতলায় এ ঘটনা ঘটে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের অংশ হিসেবে সকাল থেকে যশোর শহরের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে যশোর পৌরসভার সামনে জড়ো হন। এ সময় মিছিলের চেষ্টা করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
এরপর শহরের ইদগাহ মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এ সময় পুলিশ এক দফা বাধা দিলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে পুনরায় অগ্রসর হতে থাকে। এরপর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে চার রাস্তার মোড়ে মিছিলটি পৌঁছালে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাসহ, পুলিশ সদস্য ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর আগে শহরের ঈদগাহ মোড় এলাকা থেকে রনি, আকাশ, রানা, তৌহিদুল, রিয়াজ ও ইব্রাহিম নামে ছয় শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করেছে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন বেশি জখম হয়েছেন। তাদের অনেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আবার অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আতঙ্কে বাড়িতে চলে গেছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আন্দোলনকারী এক ছাত্রী বলেন, বিগত আন্দোলনের দিনগুলোতে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা করলেও যশোরের পুলিশ ভাইয়েরা আমাদের কোনো বাধা দেয়নি, বরং আমাদের আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণভাবে সহোযোগিতা করেছে। আজকে আমরা আন্দোলনে আসার সময় পুলিশ ভাইদের জন্য ফুল নিয়ে আসি। তাদেরকে ফুল দেওয়ার চেষ্টা করি কিন্তু তারা আমাদের ফুলও নেয়নি। আজ তাদের আচরণের মতো ফুলগুলোও মরে গেছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের হাতে একটি লাঠিসোঁটাও ছিল না। পুলিশ আমাদের মিছিলে বাধা দেয় একপর্যায়ে পুরুষ পুলিশ সদস্যরা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। সেখানে কোনো নারী পুলিশ সদস্য ছিল না। পুরুষ পুলিশ সদস্যরা আমাদের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন , তাদের আন্দোলকারীদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। এছাড়া পুলিশের লাঠিচার্জে প্রায় ১০ জন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পুলিশের বাধার মুখে পড়েছে। বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বাধা দিয়ে আটক করে আমাদের আন্দোলন প্রতিহত করা যাবে না। আমরা রাজপথে ছিলাম, থাকব।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. প্রার্থ প্রতীম চক্রবর্তী জানান, আহত কয়েকজন শিক্ষার্থী জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের শরীরে বেশি আঘাত লেগেছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কাউকে আটক করা হয়নি। শহরের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)