শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান, সবখানেই এই মুহূর্তে আলোচনায় বিসিএস’সহ বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি) আওতাধীন বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসকাণ্ড।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রচারের পর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের ১৭ জনকে। যার মধ্যে রয়েছেন পিএসসির বর্তমান পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। রয়েছেন পিএসসির সাবেক কর্মচারীও। তবে সবেচেয়ে বেশি আলোচনায় পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, আবেদ আলী পিএসসির সাবেক এক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। এরপর আলোচনা শুরু হয়, সেই চেয়ারম্যান কে ছিলেন তা নিয়ে।
এর মধ্যে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সৈয়দ আবেদ আলী পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের গাড়িচালক ছিলেন। আর এর সঙ্গে আলোচনায় আসে, জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম পিএসসির চেয়ারম্যান থাকাকালে তার ছেলে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসান ২৪তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন। যদিও পরে ওই পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে লেখালেখি করেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে মুখ খুলেছেন তাহসান। সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, তিনি কখনো বিসিএস পরীক্ষাই দেননি। এমনকি আবেদ আলী তার মায়ের গাড়িচালকও ছিলেন না।
তাহসান খান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, “মানুষ বুঝে এসব ভুয়া খবর। এরই মধ্যে মানুষজন এর প্রতিবাদও করছে। নানানজন নানানভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আরেকটা কথা, আমি কিন্তু কোনো দিন বিসিএস দিইনি। আর যেই গাড়িচালকের (সৈয়দ আবেদ আলী) কথা বলা হচ্ছে, তিনি কোনো দিন আমার আম্মার গাড়িচালক ছিলেন না।”
এদিকে পিএসসি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রথম আলো জানিয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার ঘটনায় আবেদ আলী ২০১৪ সালে পিএসসি থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। আবেদ আলী যত দিন পিএসসির চাকরিতে ছিলেন, তত দিন তিনি সংস্থাটির কোনো চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন না। তিনি একজন যুগ্ম সচিবের গাড়িচালক ছিলেন।
ড্রাইভার থেকে ‘ব্যবসায়ী ও দানশীল’ আবেদ আলী, যা বলছেন গ্রামবাসীড্রাইভার থেকে ‘ব্যবসায়ী ও দানশীল’ আবেদ আলী, যা বলছেন গ্রামবাসী
জানা গেছে, তাহসানের মা অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ২০০২ সালের মে মাস থেকে ২০০৭ সালের মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ছিলেন। আর সৈয়দ আবেদ আলী ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পিএসসির গাড়িচালক ছিলেন।
আবেদ আলী: প্রশ্নফাঁস করে যে টাকা কামিয়েছি সব আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছিআবেদ আলী: প্রশ্নফাঁস করে যে টাকা কামিয়েছি সব আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছি
অন্যদিকে, তাহসান ও তার মাকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিনোদন জগতের অনেক তারকাও। তারা তাহসানের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন কথা প্রচার করার কারণে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। সুরকার ও সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ ফেসবুকে লিখেছেন, “তাহসানের পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশ হবার খবরটি সত্য নয়। তাহসানের নামে ছড়ানো খবরটি একেবারেই মিথ্যা, সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
‘হোটেল সান মেরিনা’ নিয়েও প্রতারণার পরিকল্পনা ছিল আবেদ আলীর?‘হোটেল সান মেরিনা’ নিয়েও প্রতারণার পরিকল্পনা ছিল আবেদ আলীর?
সাধারণ মানুষের নজর অন্য দিকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য এসব “ভুয়া” খবর সামনে আনা হয় মন্তব্য করে প্রিন্স মাহমুদ লিখেছেন, “তাহসানের বাবা–মা দুজনেই অত্যন্ত সৎ মানুষ। ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সাধারণ সরকারি কর্মকর্তাদের বাচ্চাদের মতো বড় হয়েছে তাহসান। কোনোরকম বিলাসিতা দেখিনি। যা তাহসানের অর্জন, সমস্তটা গানের জন্যই। প্রকৃত অসৎদের ধামাচাপা দেয়ার জন্য এগুলো ছড়ানো হচ্ছে। তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)