বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
একটি কার্যকরী যুদ্ধবিরতির জন্য বেশ কয়েক মাস ধরেই কাজ করে যাচ্ছে কাতার ও মিশর। কিন্তু দুই পক্ষকে এক করতে পারছেন না তারা। হামাস রাজি হলে বেঁকে বসছে ইসরায়েল, কখনো আবার ইসরায়েলের প্রস্তাব যৌক্তিক মনে করছেন না হামাস নেতারা। এমন অচলাবস্থার জন্য যখন ফিলিস্তিনকে দোষারোপ করে আসছিল ইসরায়েল, তখন ভিন্ন কথা বললেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া।
হামাস প্রধান বলেছেন, যুদ্ধবিরতির একমাত্র বাধা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। মূলত তার গোয়ার্তুমির কারণেই আটকে আছে যুদ্ধবিরতির চুক্তি। ইসরায়েল মুখে আলোচনার কথা বললেও তারা এতে কোনো সহায়তা করছে না বলে মন্তব্য করেছে হামাস। একইসঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আলোচনায় বাধা সৃষ্টি করার জন্যও অভিযুক্ত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। খবর আল-জাজিরার।
সোমবার এক বিবৃতিতে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজায় যা ঘটছে তার দায় নেতানিয়াহু এবং তার সেনাবাহিনীকেই নিতে হবে। তাদের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি অপেক্ষা করছে। নতুন করে শুরু করার জায়গায় নিয়ে যেতে পারে’।
এক বিবৃতিতে হামাস আরও বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সম্প্রসারণমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী কাতার এবং মিসরের সঙ্গে ‘জরুরি যোগাযোগ’ করেছেন ইসমাইল হানিয়া। ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের আশপাশের এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের আবারও উচ্ছেদের আদেশ জারি করেছে। এর ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন, যাদের মধ্যে অনেককে আবার একাধিকবার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছেন।
গত রোববার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজা শহরের তুফাহ, দারাজ এবং ওল্ড সিটির পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে পৃথক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুকে ‘আমাদের (ফিলিস্তিনি) জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন এবং অপরাধ বৃদ্ধি’ করার জন্য অভিযুক্ত করেছে হামাস। গোষ্ঠীটি বলেছে, ‘চুক্তিতে পৌঁছানোর সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মূলত ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিদের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাদের মধ্যে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি আবার তাঁবুতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ইসরায়েলি বাহিনী অবশ্য ইতোমধ্যেই বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবুতেও হামলা চালিয়েছে।
গত ৮ জুন ইসরায়েলি বাহিনী নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায় এবং সেখানে আটক থাকা চার ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্ত করতে কমপক্ষে ২৭৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল কমপক্ষে ৩৮ হাজার ১৯৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এছাড়া হামলায় আরও আহত হয়েছেন প্রায় ৮৮ হাজার মানুষ।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪০ জন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)