বৃহঃস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার দায় ভারত সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, একটা দেশের হাইকমিশনে এভাবে আক্রমণ কোনো সভ্য রাষ্ট্রের আচরণ হতে পারে না। আমরা বলব এই ঘটনায় ভারত সরকার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। এই ঘটনায় সম্পূর্ণ দায় আমরা ভারতকেই দিচ্ছি।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে, বাংলাদেশের পতাকা জোর করে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুঃখ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। এমন কী আমরা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছি।
তিনি বলেন, ভারতের মিডিয়া যে এতদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, এটা কিন্তু রাষ্ট্রীয় সমর্থন ছাড়া হয় না। ফলে আমরা মনে করি, ভারত সরকারের এখানে দায় আছে। তারা দায়িত্বশীল আচরণ তখন থেকেই করেনি, এমনকি তারা উল্টো একটা বিভাজন তৈরির অপচেষ্টা করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ত্রিপুরা, আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। এমনকি ছাত্রজনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও কলকাতা, যাদবপুর এবং দিল্লির মানুষ শেখ হাসিনার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আমাদের যে একটা সুন্দর গণতান্ত্রিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে সেটা হয়ত অনেকেই চায় না, সারা বাংলাদেশ এবং দেশের মানুষের সঙ্গে বিভাজন তৈরি করতে চায়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ভারতকে বলব এই বিভাজনের রাজনীতিতে না গিয়ে বরং একটা সৌহার্দ্যের রাজনীতিতে আসুন। একটি দেশের হাইকমিশনে গিয়ে আক্রমণ কোনো সময়েই কোনো সভ্য রাষ্ট্রের আচরণ নয়।
তিনি আরও বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের একটা ক্ষোভ রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ছিল, তাদেরকে ভারত নিঃশর্তভাবে সমর্থন জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা ভোট চুরি করেছে, গুম-খুন করেছে এবং সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এতকিছুর পরও ভারতের কিন্তু এ সমস্ত বিষয়ে বক্তব্য নেই বরং সেই হত্যাকারীদের প্রধানকে তারা নিজেদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে। এসব কারণে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ক্ষোভ থাকাটা খুবই স্বাভাবিক।
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে আহ্বান জানাই— আমরা কোনো দেশ নিয়ে বিদ্বেষ ছড়াব না। কোনো রাষ্ট্রের পতাকাকে আমরা অবমাননা করব না এবং ভারতের উচিত বাংলাদেশের মানুষের এই ক্ষোভ দূরীকরণে তাদের নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করা। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য ও তথ্য না ছড়িয়ে বরং বাংলাদেশ যে নতুন করে গঠন হচ্ছে, সেখানে আমাদের সহযোগিতা করুন। ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে সব রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চায় বাংলাদেশ।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)