রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এখানে মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেক ছাত্রী পড়াশোনা করে তা খুবই ভালো ইমেজ। আবার ডকুমেন্টারিতে দেখলাম আন্দোলনে মেয়েরা নেতৃত্ব দিয়েছে। আন্দোলনে এ বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে। ইমেজের সাথে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জড়িত। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে এ কাজ করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে কাজ করতে হবে। সর্বোপরি সকলের উচিত শহিদদের মূল্যায়ন করা। যে হলগুলোর নাম স্বৈরাচারের নামে রয়ে গেছে। এগুলো শহিদদের নামে পরিবর্তন করা দরকার।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) টিএসসিসিতে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির (ইবিসাস) যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আপনারা ভাবছেন ধীর গতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। অথচ অর্থনৈতিক রিকোভারি হয়েছে। অর্থনৈতিক গতি বেড়েছে। জাস্টিস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি নিশ্চিতে গুম, খুন, গণহত্যার বিচারের কাজ করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে আইনি প্রসেসে আমরা শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করবো। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যা করা উচিত; রাষ্ট্র সংস্কারে তাই করছে। আপনাদের বাংলাদেশই গড়ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আপনাদের অনেকের মনে হচ্ছে যা চাচ্ছি তা হচ্ছে কিনা? তার জবাবে বলবো আমরা অভূতপূর্ব কাজ করছি। জন আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হচ্ছে। ৫ মাসে দেশে একটা স্থিতিশীলতা এসেছে।
প্রেস সচিব বলেন, দেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ করার বিষয়টি লক্ষ রাখতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে কমিশনের মাধ্যমে আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা হচ্ছে। জুলাই আন্দোলনের ফসল কমিশনের রিপোর্ট। আপনারা এগুলো পড়ুন ও ক্যাম্পাসে এসব নিয়ে বিতর্ক করুন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রশিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আলোচক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ে সংযুক্ত ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ সংবাদদাতা এস এম রাশিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজমুল হক জায়িমের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইমরান শুভ্র, ইমামুল হাছান আদনান, এমদাদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান নবীন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, ইবি শাখার ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। এসময় সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আন্দোলনের সময়ে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। গণমাধ্যম এখনও অভ্যুত্থানের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। তবে সকল স্থানেই কিছু সুবিধাবাদী থাকে। তথাপি সাংবাদিকদের অসামান্য অবদান রয়েছে। বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করতে সাংবাদিকরা সবসময় পাশে থাকবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সকল সংকট ও উন্নয়নে সাথে ছিলো। আগামীতেও এই বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রয়োজনে পাশে থাকবে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)