শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
যানজটের শহর ঢাকা এখন অনেকটাই অচল। চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে থমকে গেছে রাজধানী ঢাকার বেশ কয়েকটি সড়ক। একই সময়ে নগরীর দক্ষিণ অংশে শুরু হয় রথযাত্রা। ফলে সব মিলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীবাসী। অফিস ছুটির পর যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরের পর কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেওয়ার পর এই সঙ্কট দেখা দেয়।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দুপুর পৌনে ২টার দিকে নীলক্ষেত থেকে মিছিল নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে আসেন। এরপর বেলা ৩টার দিকে কাছাকাছি দূরত্বে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বিকাল ৪টার আগে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে আসার আগে তারা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে টিএসসি হয়ে শাহবাগে এসে শেষ হয়। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনেও অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে, চানখারপুল মোড়ও অবরোধ করেছেন একদল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে যানজট তৈরি হয়েছে।
এছাড়া আগারগাঁওয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন বিকাল ৪টার দিকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা চারদিকের সড়কই আটকে রেখেছেন। যেতে দেওয়া হচ্ছে না বাস, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন।
হাসপাতাল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে বাসায় ফিরছিলেন এক যাত্রী। তিনি শিক্ষার্থীদের অটোরিকশাটি যেতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। এই যাত্রী বলেন, ‘আমি ওদের অনুরোধ করলাম যে- বাবা, আমার সিএনজিটা ছাইড়া দাও। আমি বেশি হাঁটতে পারি না। ওরা আমারে উল্টো বুঝাইল- সরকার ওদের সঙ্গে কতটা জুলুম করতাছে। আমি বললাম বাবারে, আমি তো কিছু করি নাই, এখন তো আমার উপরে জুলুম হইতাছে। তখন ওরা বলে, আমাদের সবারই নাকি তাদের দাবি সমর্থন করা উচিত আছিল।’
এদিকে, রাজধানীর টিকাটুলি থেকে বেলা আড়াইটায় রথযাত্রা শুরু হয়। এ কারণে সেখানকার সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
টিকাটুলি থেকে ধানমণ্ডি যাওয়ার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর বাইকে যাওয়ার চেষ্টা করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর খান। বাইক পাওয়া গেলেও দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া দাবি করছেন তারা। এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেক রাস্তা বন্ধ। যেসব রাস্তা চালু আছে সেখানে তীব্র জ্যাম। না যেয়েও উপায় নেই। বাইকে ভাড়া চায় অনেক, তাও সবাই যেতে রাজী হচ্ছে না। অনেক কষ্টে একটা বাইক পেয়েছি। কিন্তু রাস্তার যে অবস্থা, জানি না কতক্ষণে পৌঁছাব।’
এর আগে, সকালেই সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, নগরে যানজট হতে পারে। কারণ, বিকাল ৩টায় স্বামীবাগ আশ্রম থেকে রথযাত্রা বের হয়ে মতিঝিল, গুলিস্তান হয়ে আবার সেখানে গিয়ে শেষ হবে।
এ কারণে নগরবাসীকে হাতে সময় নিয়ে বের হতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)