শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেছেন, বাজেটে বেকারদের কর্মসংস্থানে কথা বলা নেই। নতুন শিল্প কলকারখানার কথা নেই। আজকে শিক্ষিত বেকাররা বিদেশ চলে যাচ্ছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে দুর্নীতিবাজদের আরও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশে এসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন। তাহলেই দেশের সকল সমস্যার সমাধান হবে। মুক্তি পাবে গণতন্ত্র, আর মানুষ ফিরে পাবে বাকস্বাধীনতা।
সোমবার (১০ জুন) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিনসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-৬ আসনের সাবেক ছাত্রদল নেতাদের আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আব্দুস সালাম বলেন, এ সরকার সিন্ডিকেটের সরকার। সকল কালোবাজারী ও দুর্নীতিবাজদের সাথে সিন্ডিকেট করে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আজকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ব্যাংকের গভর্নর কি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বেশি শক্তিশালী। আসলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশই গভর্নর পালন করেছেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ও দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবেক ছাত্রনেতা সাইদুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্রনেতা মুকিতুল আহসান রঞ্জুর সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে খালেদা জিয়ার তুলনা দেন। তার সাথে কারো তুলনা হয় না। খালেদা জিয়া কারো সাথে আপস করেন না। এরশাদের সাথে আপস করে নির্বাচনে কে গিয়েছিল, ১/১১—তে কে ফখরুদ্দিন সরকারের সাথে আপস করেছিলেন? তখন যদি খালেদা জিয়া আপস করতেন; তখনও আপনি (শেখ হাসিনা) নন, খালেদা জিয়াই আবার প্রধানমন্ত্রী হতেন। চলমান আন্দোলনেও অনেকবার আপসের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আপসহীন নেত্রী আপস করেননি। ৯৬ সালে তিনি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি আপস করেছিলেন জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনও বন্দী। ইশরাককে হাইকোর্ট জামিন দিলেও নিম্ন আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। জেল-জুলুম বিএনপি ভয় পায় না। এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে আব্দুস সালাম বলেন, আজকে যারা জোটে আছেন মঞ্জু, ইনু এবং মাহি সাহেব। জনগণের পাশাপাশি আপনাদের সাথেও প্রধানমন্ত্রী প্রতারণা করেছে। তিনি কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীকে ঠিকই এমপি বানিয়েছেন। তার পাশে দাঁড়িয়েছে। লতিফ সিদ্দিকী নিজে সংসদে বলেছেন— প্রধানমন্ত্রী সরাসরি হস্তক্ষেপ না করলে এমপি হতে পারতাম না। কই মঞ্জু, ইনু ও মাহিকে এমপি বানাতে কোনো হস্তক্ষেপ করলেন না। আপনাদের পাশে তো দাঁড়ায়নি। এখনও সময় আছে তাদের ত্যাগ করে জনগণের পাশে দাঁড়ান।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, এখনও বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের আটক রাখা হয়েছে। যেসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই। যেখানে ন্যায় বিচার নেই, সেখানে বিচার চেয়ে লাভ নেই। আজকে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা ঘুরে বেড়ায় আর গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন কারাগারে। আজকে যারা দেশের অর্থনীতিতে পঙ্গু করে দিয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আজকে যে বেনজীরকে দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা করিয়েছেন, হত্যা করিয়েছিলেন, হাজার কোটি টাকা লুট করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তার বিচারতো করছেনই না, বরং দেশ থেকে যাতে পালাতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক রওনাকুল ইসলাম টিপু, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার, লিটন মাহমুদ, জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ফায়েজ উল্লাহ ইকবাল, শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. সুমন ভূইয়া ও মহিলা দলের সভানেত্রী রুমা আক্তার প্রমুখ।
এ সময় যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাগর, কাজী আজিজুল হাকিম আরজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার, মকবুল ইসলাম খান টিপু, নাদিয়া পাঠান পাপন, এম এ হান্নান, জামশেদুল আলম শ্যামল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, গেন্ডারিয়া থানা বিএনপির আব্দুল কাদের, ডেমরা থানা বিএনপির অন্যতম নেতা মো. আনিসুজ্জামান ও মো. সেলিম রেজা, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ সায়েম, কোতয়ালি থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহিম ভূইয়া, সাইদুর রহমান সাইদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)